নিজস্ব প্রতিবেদন: বছর দু’য়েক আগে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছিল, রাজ্যে উৎপাদিত বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত। তাই বিহার, ঝাড়খণ্ড ইত্যাদি রাজ্যে তা বিক্রি করে দেওয়া হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান চিত্র দেখলে এ কথা আদৌ বলা যায় না। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অধীন এলাকাগুলোয় সাম্প্রতিক কালে শুরু হয়েছে ব্যাপক লোডশেডিং। এক নাগাড়ে টানা দু' তিন, চার ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে বসে থাকতে হচ্ছে আমজনতাকে। বিদ্যুৎ অফিসে বার বার ফোন করে বা ডকেট নম্বর জানিয়ে কোনও কাজ হচ্ছে না বলেও অভিযোগ৷
সিইএসই এলাকার পরিষেবা নিয়ে অবশ্য তেমন অভিযোগ নেই। কিন্তু শহরতলি এবং মফসসলের WBSEDCL পরিষেবার অবস্থা খুবই খারাপ। অভিযোগ জানালে শোনানো হয় এই কথা- আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মেরামতির কাজ চলছে। এই আমফানকে শিখণ্ডী খাড়া করে আর কতদিন আক্ষরিক অর্থেই অন্ধকারে রাখা হবে তা নিয়ে দিশেহারা অবস্থা মধ্যবিত্তের। ইনভার্টার কেনার সামর্থ নেই সবার। ভাদ্র মাসের ভ্যাপসা গরমে তাই প্রাণ ওষ্ঠাগত। গভীর রাতেও চলছে লোডশেডিং তাই সাধারণ মানুষের ঘুমের দফারফা। সঙ্গে সুগ্রীব দোসর হিসেবে আছে লো ভোল্টেজের যন্ত্রণা।
বিদ্যুৎ বিপর্যয় ক্ষতি করছে কর্মক্ষেত্রেও। অতিমারির জেরে বহু সংস্থার কর্মীরা ওয়র্ক ফ্রম করছেন। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকলে কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজ করাই সম্ভব নয়, ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে কাজের। আগেও বলা হয়েছিল, এই সমস্যা মূলত শহরতলি এবং মফসসলের ক্ষেত্রে দেখা দিচ্ছে। আমফানে মফসসল এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে একথা ঠিক। কিন্তু এতদিনেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না করতে পারা প্রশাসন এবং বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থারই ব্যর্থতা। এমনকী শহরাঞ্চলেও আমফানে ভেঙে পড়া গাছপালা সময়মতো কেটে সরানো যায়নি। সিইএসই এবং পূর্ত দফতর একে অপরের ঘাড়ে দায়িত্ব ফেলে হাত গুটিয়ে বসেছিল। খাস কলকাতার চিত্রই যদি এমন হয় তবে গ্রাম, মফসসলের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। আপাতত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোনও রাস্তাই চোখে পড়ছে না রাজ্যবাসীর।