বাংলায় কমেছে দারিদ্র, কেন্দ্রের রিপোর্টে চওড়া হাসি শাসক শিবিরে

বাংলায় কমেছে দারিদ্র, কেন্দ্রের রিপোর্টে চওড়া হাসি শাসক শিবিরে

কলকাতা: দেশজুড়ে দেখা দিয়ে অর্থনৈতিক মন্দা৷ অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে বাজেটেও মেলেনি স্পষ্ট দিশা৷ কিন্তু, দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে একাধিক লাভজনক সংস্থাকে বেসরকারি সংস্থার হাতে বিক্রির কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা৷ লাফিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব৷ দেশের এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে কেন্দ্রের দেওয়া রিপোর্টে চওড়া হচ্ছে শাসক তৃণমূলের হাসি৷

কেন্দ্রের রিপোর্ট বলছে, বাংলায় গ্রাম ও শহর মিলিয়ে দারিদ্র কমেছে ৬ শতাংশ৷ গোটা দেশে যখন গড়ে দারিদ্রের হার বেড়েছে, তখন কেন্দ্রের দেওয়ার বাংলার রিপোর্ট বিধানসভা ভোটের আগে বড় অস্ত্র শাসক তৃণমূল শিবিরে৷ বিশেষ করে দেশের বড় রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে দারিদ্র কমার হার বেশি৷ কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য বলছে,  ২০১১-১২ আর্থিক বছর থেকে ২০১৭-১৮ পর্যবন্ত এই পাঁচ বছরে বাংলায় সার্বিক ভাবে দারিদ্রের হার কমেছে ১৩.৯৮ শতাংশ৷ বাংলার পরে রয়েছে গুজরাত ও তামিলনাড়ু৷

ওই দুই রাজ্যে দারিদ্র কমেছে পাঁচ শতাংশ হারে৷ আবার বড় রাজ্যগুলির মধ্যে মহারাষ্ট্রে দারিদ্র বেড়েছে৷ সেই বাড়ার হার সমস্ত রাজ্যে তুলনায় সব থেকে বেশি৷ ৫ শতাংশ৷ যোজনা কমিশনের পরিসংখ্যান বলছে,  ২০১১-১২ আর্থিক বছরে বাংলায় ১৯.৯৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করতেন৷ গ্রামে দারিদ্রের হার ছিল ২২.৫২ শতাংশ৷ সংখ্যার বিচারে ১ কোটি ৪১ লক্ষ ১৪ হাজার মানুষ বসবাস করতেন দারিদ্রসীমার নিচে৷ শহরে তখন দারিদ্রের হার ছিল ১৪.৬৬ শতাংশ৷ অর্থাৎ শহরে ৪৩ লক্ষ ৮৩ হাজার মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে ছিলেন৷

গ্রাম ও শহরে মানুষের চাহিদা এবং খরচ বিচার করে সম্প্রতি ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশন বা এনএসএসও একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল৷ সেই রিপোর্ট নিয়ে হইচই হতে তা অবশ্য ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়৷ কিন্তু সেই রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যায় সংবাদমাধ্যমে৷ ফাঁস হওয়া রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়, গ্রামীণ ভারতে দারিদ্রের হার বেড়েছে গড়ে চার শতাংশ৷ ২৬ শতাংশ থেকে তা বেড়ে হয়েছে ৩০ শতাংশ৷ এরমধ্যে সব থেকে খারাপ অবস্থা বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায়৷ বিশেষ করে ২০১১-১২ আর্থিক বছর থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত এই পাঁচ বছরে বিহারে দারিদ্র বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে পাঁচ বছরে আরও ১৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে চলে গিয়েছে৷

এনএসএসও’র হিসেব বলছে, বিহারের ৫০.৪৭ শতাংশ মানুষ বসবাস করেন দারিদ্রসীমার নিচে৷ ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায যথাক্রমে ৮.৬ শতাংশ এবং ৮.১ শতাংশ হারে দারিদ্র বেড়েছে৷ এনএসএসও’র ওই রিপোর্টেই বলা হয়েছিল, গ্রামে দারিদ্র বাড়লেও শহরে তা অনেকটা কমেছে। ১৪ শতাংশ থেকে তা নেমে এসেছে ৯ শতাংশে৷ যেহেতু গ্রামে জনসংখ্যার হার বেশি, তাই সার্বিক ভাবে দারিদ্রের হারও ভারতে বেড়ে হয়েছে ২২.৮ শতাংশ৷ অর্থাৎ আরও বেশি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে চলে গিয়েছেন৷ হিসেবমতো সেই সংখ্যা প্রায ৩ কোটি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *