কৃষি ভবন থেকে টেনে হিঁচড়ে অভিষেকদের সরাল পুলিশ! আন্দোলন হলেই কি পুলিশ দিয়ে শায়েস্তা করার চেষ্টা?

কৃষি ভবন থেকে টেনে হিঁচড়ে অভিষেকদের সরাল পুলিশ! আন্দোলন হলেই কি পুলিশ দিয়ে শায়েস্তা করার চেষ্টা?

police

কলকাতা: ‌দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কৃষি ভবনে গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে প্রবল পুলিশি হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছে তৃণমূল সাংসদদের। এমনটা যে ঘটতে পারে সেটা কেউই আন্দাজ করতে পারেননি। তৃণমূল সাংসদদের চ্যাংদোলা করে পুলিশের ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ আটক করে তারপর ছেড়ে দেওয়া হয়। যে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করছে বাংলার শাসক দল। দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রকের অধীনে রয়েছে। তাই দিল্লি পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠবে এটাই স্বাভাবিক।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যদের যে ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছে তা মুক্ত গণতন্ত্রের পক্ষে একেবারেই কাম্য নয়। কিন্তু ঘটনা হল একই অভিযোগ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মা-মাটি-মানুষ সরকারের পুলিশের বিরুদ্ধেও। প্রতিবাদ আন্দোলন করতে গিয়ে বাংলাতেও বহুবার পুলিশি জুলুমের মুখে পড়তে হয়েছে আন্দোলনকারীদের। তাই দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদ যেভাবে তৃণমূল করছে সেটা তাদের পক্ষে কতটা শোভা পায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে বারবার হস্তক্ষেপ করেছে পুলিশ। কলকাতায় চাকরিপ্রার্থীদের বহু কর্মসূচি বানচাল করতে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। মধ্যরাতে চাকরিপ্রার্থীদের পুলিশ জোর করে তুলে সরিয়ে দিয়েছিল। অত রাতে চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছিল বহু মহিলা চাকরিপ্রার্থীকে।

শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাংলার পুলিশ যেভাবে বারবার হস্তক্ষেপ করেছে, তার নিন্দায় সরব হয়েছে সব মহল। তাই দিল্লিতে যে ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দা যেমন করতে পারবে না বিজেপি, উল্টোদিকে পশ্চিমবঙ্গে নিয়মিত পুলিশি হেনস্থার যে অভিযোগ ওঠে তারও নিন্দা করতে পারবে না বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে কি পুরো সিস্টেমটা এভাবেই চলবে? যার যেখানে শক্তি রয়েছে সেখানে আন্দোলনকারীদের এভাবে হেনস্থা করা হবে?

বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে মিটিং মিছিল করতে গেলে পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে কর্মসূচি পালন করতে পারেন তাঁরা। একই ভাবে দিল্লিতে গিয়েও প্রশাসনের অনুমতি আদায় করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে তৃণমূলকে। অর্থাৎ ছবিটা কমবেশি সব জায়গায় একই রকম। এই পরিস্থিতিতে বাংলায় আগামী দিনে বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার কতটা পরিসর থাকবে সেটা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠে গেল। দিল্লিতে যে অবস্থার মুখে পড়তে হল তৃণমূল সাংসদদের, একই ঘটনা এবার বাংলাতেও দেখা যাবে? পুলিশ পাঠিয়ে হেনস্থা করা হবে আন্দোলনকারীদের? এই সমস্ত প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে।

রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মত, শাসক দমনপীড়ন নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। তাই বিরোধীদের আন্দোলন থামাতে তাদের উপর বারবার নেমে এসেছে পুলিশের লাঠির আঘাত। তবে কী এমনটাই চলতে থাকবে? এই মানসিকতা থেকে কোনও দলই বেরিয়ে আসতে পারবে না? পুলিশি বাধার মুখে না পড়ে দেশ জুড়ে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন হচ্ছে, এমন ছবি কী দেখা যাবে না? সময়ই এর উত্তর দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *