নিজস্ব প্রতিনিধি, সোনারপুর: প্রায় ছমাস ধরে বন্ধ ট্রেন। বাস চলছে কিন্তু তাতে ভাড়ার পরিমান দ্বিগুণ, রাস্তায় বাসের সংখ্যাও স্বল্প। সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের যাতায়াত প্রায় নরকযন্ত্রণার সমান হয়েছে দাঁড়িয়েছে। এদিকে ট্রেন চালানোর বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করছে না কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। ফলে সাধারণ মানুষের ত্রাহি মধুসূদন পরিস্থিতি। এর মধ্যেই উৎসবের মরসুম সামনেই, তাই ক্রমেই রোষ বাড়ছে আমজনতার।
তারই এক নমুনা মিলল বৃহস্পতিবার সোনারপুর স্টেশনে। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার সোনারপুরে স্টাফ স্পেশাল ট্রেন থেকে আমজনতাকে নামাতে গিয়ে পুলিশের সাথে যাত্রীদের খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। বারুইপুর থেকে শিয়ালদহগামী ট্রেন থেকে অবৈধ যাত্রীদের নামানোর চেষ্টা করে সোনারপুর জিআরপি ও আরপিএফ। সেইসময় অবৈধ যাত্রীরা একজোট হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি পাথর ছোঁড়ে। পাথরের আঘাতে ভেঙে যায় ট্রেনের জানলার কাঁচ।
পুলিশ সাময়িকভাবে কিছুটা পিছু হটে। তারপর আরও পুলিশবাহিনী এলে অবৈধ যাত্রীদের উপর লাঠিচার্জ করা হয়। রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে এই ঘটনায় ২ জন যাত্রী জখম হয় এবং ৩ জনকে রেল পুলিশ আটক করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসুর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এ বিষয়ে ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন ঘটনাটি জিআরপির অধীনে থাকলেও কাছেই সোনারপুর থানা সেজন্যই তিনি পরিস্থিতি দেখতে ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, জিআরপি এবিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে রেলের স্টাফদের জন্য নির্ধারিত ট্রেনে এভাবে চড়ে বসা যে বেআইনী তা সবারই জানা। তবুও এভাবে ট্রেনে চড়ে বসা এবং নামাতে গেলে পুলিশকে আক্রমণের এই ঘটনা কিন্তু আমজনতার অসহিষ্ণুতারই পরিচয় দেয়। দিনের পর দিন যাতায়াতের ঝামেলা সামলাতে সামলাতে সাধারণ মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়াতেই তারা এভাবে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। শীঘ্রই পরিস্থিতি বদলের চেষ্টা না করলে সোনারপুরের মত ঘটনা প্রায়শই ঘটতে পারে বলে করছে ওয়াকিবহাল মহল।