দেগঙ্গা: গোপনে নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল৷ হাজির হয়েছিলেন বর সহ বরপক্ষও৷ তৈরি করা হয়েছিল ছাদনা তলা, ছিলেন পুরুত মশায়ও৷ কিন্তু গোপন সূত্রের খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে হানা দিতেই কার্যত ভণ্ডুল হয়ে গেল বিয়ে৷ গ্রেফতারি এড়াতে ছাদনাতলা থেকে পালালেন বর সহ বরপক্ষ৷ অন্যদিকে কিশোরীর পরিবারকে দিয়ে মুচলেখা লিখিয়েছে পুলিশ৷ তবেই রেহাই পেয়েছেন মেয়ের বাড়ির অভিভাবকেরা৷ দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের খঁড়ুয়া চাঁদপুর গ্রামের ঘটনা৷
‘১৮ বছর না হলে বিয়ে দেবে না’ মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে মুচলেখা দেওয়া হয়৷ স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের খঁড়ুয়া চাঁদপুর গ্রামের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ১৭ বছরের সাবিনা ইয়াসমিনের বিয়ে ঠিক হয় রাজারহাটের বাসিন্দা রোহিত মণ্ডলের সঙ্গে। শনিবার রাতে তাঁদের বিবাহ অনুষ্ঠানের তোড়জোর করা হয়। বরযাত্রী এবং ওই বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রিত আত্মীয় পরিজনদের জন্য রান্নাবান্না সব কমপ্লিট৷ এমনকি বর এসে হাজির৷ সঙ্গে বরযাত্রীরা৷ হাজির পুরুত মশায়ও৷ ঠিক বিয়ে শুরু হবে এমন সময় বাড়ি ভর্তি আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বিয়ে বাড়িতে পুলিশ! হতভম্ব হয়ে যায় অনুষ্ঠানে আসা মানুষজন৷ যে যার মত গা ঢাকা দেয়ার চেষ্টা করে।
গোপন সূত্রে রাতেই দেগঙ্গা থানার পুলিশের কাছে খবর যায় খঁড়ুয়ায় চাঁদপুরে নাবালিকা ছাত্রীকে তার পরিবার বিয়ে দিচ্ছিল। দেগঙ্গা থানা পুলিশ ওই নাবালিকা ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার বয়সের প্রমাণপত্র দেখতে চাই। দেখা যায় ওই ছাত্রীর বয়স ১৭ বছর। এই কারণে পুলিশের পক্ষ থেকে ওই নাবালিকার বিয়ে আটকে দেওয়া হয়। এদিকে পুলিশ আসার খবর পেয়ে বরযাত্রীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ওই ছাত্রীর দাদা আসাদুল গাজি বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে মুচলেখা দিয়েছে যে বোনের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেব না৷ তারপরই পুলিশ ফিরে গিয়েছে৷’’
পরিবার সূত্রে জানা যায়, তার পরিবারের অজ্ঞতার কারণে ছাত্রীর বিয়ে ঠিক করা হয়৷ পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রামবাসী এবং ওই ছাত্রীকে সচেতন করা হয় এবং বিয়ে বাড়িতে আসা আত্মীয়-স্বজনদের দেগঙ্গা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সচেতন করা হয়৷ পুলিশ কর্তারা বলেন, ‘‘বাল্যবিবাহ আইনত অপরাধ৷ ১৮ বছরের নিচে কোনও মেয়েকে বিয়ে দেবেন না এবং পাত্রী যেন বিয়ে না করে। কারণ তাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতি হতে পারে৷’’