হলদিয়া: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উত্তরাখণ্ডে আকস্মিক বিপর্যয়ের খবর পেয়েও বঙ্গ সফর বাতিল করেন নি তিনি। ভোটের আগে বাংলাকে যে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব, এদিন আরো একবার প্রমাণিত হয়েছে সে কথাই।
পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার সভা মঞ্চ থেকে এদিন বাংলা ভাষায় বেশ কিছুক্ষণ বক্তৃতা দিতে দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রীকে। আর কয়েক মিনিটের সেই বাংলা ভাষণে উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গ তথা মেদিনীপুরের অতীত ইতিহাস, গৌরবময় সংগ্রাম, ব্রিটিশবিরোধী ঐতিহ্যের কথা। প্রথমেই তিনি বলেন, “আমার প্রিয় মা বোন ভাই ও বন্ধুরা, মেদিনীপুরের এই পবিত্র মাটিতে আসতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। শহীদ মা মাতঙ্গিনী, বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর রক্তে রাঙা হয়েছে এই পবিত্র ভূমি।”
মেদিনীপুরের ইতিহাস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী যে বেশ লেখাপড়া করেই মঞ্চে উঠেছেন এদিনের বাংলাদেশের ভাষণ থেকেই তা পরিষ্কার। তিনি বলেন, “এই মাটিতেই তৈরি হয়েছিল তাম্রলিপ্ত সরকার। এই মাটির বীর সন্তান বিদ্যাসাগর মহাশয় বাঙালিকে বর্ণপরিচয় দিয়েছেন। সতীশচন্দ্র সামন্তের হাতে তৈরি হয়েছে হলদিয়া বন্দর। মেদিনীপুরের এমন মাটির গুণে আমি মুগ্ধ।” ভারতের সমস্ত বীর ও মনীষীদের দিশা দেখানো ব্যক্তিত্বের জন্ম দিয়েছে বাংলার মাটি, এদিন সে কথাও স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পবিত্র বাংলার এই মাটিকে মাথা নীচু করে প্রণাম করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছরের বর্ষে পশ্চিমবঙ্গের মতো পবিত্র ভূমির মাটি স্পর্শ করে অন্তর থেকে প্রেরণা অনুভব করেছেন তিনি।
বস্তুত, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মন জয় করার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাংলা ভাষণ এই নতুন নয়। এর আগেও একাধিক বার একাধিক লাইন বাংলায় উচ্চারণ করেছেন তিনি। এদিন হলদিয়া সফরের আগেও ট্যুইটারে বাংলায় আগমনবার্তা জানান তিনি। বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা দখলে মরিয়া বিজেপির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার লোকপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলা-যোগ। এছাড়া, বাঙালি সংস্কৃতি ঐতিহ্যকে অপমানের অভিযোগ বারবার উঠেছে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে। এদিন তাকেও খন্ডন করার চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী।