চিটফান্ড মামলায় প্রথম রায় ঘোষণা, দোষী সাব্যস্ত সস্ত্রীক পিনকনকর্তা

চিটফান্ড মামলায় প্রথম রায় ঘোষণা, দোষী সাব্যস্ত সস্ত্রীক পিনকনকর্তা

তমলুক: সারদা-রোজভ্যালি-সহ একাধিক চিটফান্ড মামলার তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পুজোর পর চিটফান্ড মামলার চূড়ান্ত পর্বের চার্জশিট দাখিল করতে চলেছে সিবিআই৷ দীর্ঘ প্রায় ছ’বছর পর এবার আরও একটি চিটফান্ড মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা করল তমলুক জেলা আদালত৷

আজ তমলুক আদালতে চিটফান্ড পিনকন মামলার রায়দান ছিল৷ সেখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা আদালত৷ দীর্ঘ মামলার পর পিনকনকর্তা মনোরঞ্জন রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত৷ সঙ্গে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন পিনকনকর্তা স্ত্রী মৌসুমী রায়৷ পিনকন চিটফান্ড মামলায় ৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে তমলুক আদালত৷ ওই একই মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন ১০ অভিযুক্ত৷ দু’জনের ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়ে গিয়েছে৷
শারীরিক সমস্যার কারণে এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন পিনকনকর্তা মনোরঞ্জন রায়৷ কনফারেন্সের মাধ্যমে মনোরঞ্জনকে শুনানিতে আদালতের সামনে হাজির করানো হয়৷ অসুস্থ মনোরঞ্জনের সামনে চলে রায়দান প্রক্রিয়া৷ তবে, দোষী সাব্যস্ত হলেও এখনও পর্যন্ত সাজা ঘোষণা হয়নি৷

প্রতারণা মামলায় আইনে এই প্রথম রায় ঘোষণা করে কোনও চিটফান্ডকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত৷ পিনকনের মালিক মনোরঞ্জন রায় ও তাঁর স্ত্রী মৌসুমী রায় দোষী সাব্যস্ত হলেও আমানতকারীরা আদৌ তাঁদের কষ্টার্জিত টাকা ফেরত পাবেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি৷ লক্ষ লক্ষ প্রতারিত আমানতকারীরা এখনও তাকিয়ে, কবে তাঁরা ফিরে পাবেন কষ্টার্জিত টাকা৷

২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে এই মামলার শুনানি পর্ব চলছে৷ মামলার শুরু থেকেই পিনকন অর্থ লগ্নি সংস্থার মামলা ঘিরে ঘটেছে বহু ঘটনা৷ কখনও এজলাসের মধ্যেই আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে, কখনও আবার বিচারকের বদলি ঠেকাতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন আমানতকারীরা৷ কখনও আবার বিচারকের অজ্ঞাতে জেল থেকে বেরিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে অভিযুক্তদের৷ পিনকন কর্ণধার মনোরঞ্জন রায় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি৷ চিকিৎসার জন্য গত মে থেকে তিনি ভর্তি রয়েছেন নিজের তৈরি নার্সিংহোমে৷

অভিযোগ, ওই নার্সিংহোমে বসেই চিটফান্ডের কাজ পরিচালনা করছেন তিনি৷ এহেন অভিযোগে তমলুক আদালতের বিচারক চরম অসন্তুষ্ট বলে খবরে প্রকাশ৷ গত ৩ মাস ধরে মামলার শুনানির জন্য সময় দেওয়া হলেও আদালতে হাজিরা দেননি মনোরঞ্জন ও তাঁর আইনজীবী৷ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ইচ্ছা করে মামলার রায়কে বিলম্বিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ পরে আজ ভিডিও সংযোগে চলে মামলার শুনানি৷ অন্যদিকে, আদালত থেকে ৬ কোটি টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন আগেই পেয়ে গিয়েছিলেন মনোরঞ্জনের স্ত্রী মৌসুমি৷ জামিনের শর্ত ছিল, বিচারপ্রক্রিয়ার দিন তাঁকে বাধ্যতামূলক ভাবে হাজির থাকতে হবে৷ অভিযোগ, জামিন মিললেও আদালতে হাজিরা দেননি মৌসুমি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × three =