কলকাতা: নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় এবার সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল মামলা৷ সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলার আবেদনে অনুমতি চেয়েছেন এক সমাজকর্মী৷ দ্রুত মামলর শুনানিতে অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণণ৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী শুক্রবার এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা৷
আদালত সূত্রে খবর, সুরজিৎ সাহা নামের এক সমাজকর্মী কলকাতা হাইকোর্টের প্রাধান বিচারপতির কাছে মামলা দায়ের করার অনুমতি চান তিনি৷ জানান, নন্দীগ্রামে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী আহত হয়েছেন, গোটা ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে অবিলম্বে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানানো হয়েছে৷ মামলা দায়ের করে সমাজকর্মের দাবি, একজন মুখ্যমন্ত্রী জেড প্লাস নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন৷ তিনি কীভাবে আক্রান্ত হলেন? কীভাবে ওই ঘটনা ঘটে, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন ওই সমাজকর্মী৷ কেননা মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্র করে প্রচর নিরাপত্তাকর্মী থাকেন৷ থাকে নিরাপত্তা বলয়৷ সেই নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে কীভাবে আহত হলেম মুখ্যমন্ত্রী? তা জানতে চেয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে৷
মামলাকারী সমাজকর্মীর দাবি, ঘটনার ৩ দিন দিন কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত পুলিশের তরফে কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি৷ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ৷ অবিলম্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার ঘটনার তদন্ত সিবিআই হাতে তুলে দিয়ে পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে দাবি জানিয়েছেন সমাজকর্মী৷ সমাজকর্মের আবেদনের ভিত্তিতে মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি৷ আগামী শুক্রবার মামলার শুনানি হওয়ার কথা৷ ওই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট কি নির্দেশ দেয়, সেদিকে তাকিয়ে গোটা বাংলা৷
বুধবার হলদিয়ায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নন্দীগ্রামে বিভিন্ন একাধিকয় যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিকেলের যান রানিচকে একটি উৎসবে৷ সেখান থেকে রেয়াপাড়ার কাছে ফেরার আগেই ঘটে বিপত্তি৷ বাড়ির কাছাকাছি এসে আচমকা থমকে যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়৷ দেখা যায়, মমতা পা ধরে গাড়ির মধ্যে বসে আছেন৷ দ্রুত তাঁর জন্য আনা হয় বরফ৷ পরে নিরাপত্তাকর্মীরা পাঁজাকোলা করে সামনের আসনে বসে থাকা মমতাকে দ্রুত পিছনের আসনে বসানোর ব্যবস্থা করে৷ পরে আহত অবস্থায় দ্রুত নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে৷ সেখানে বিশেষ কেবিনে তাঁর চিকিৎসা চলছে৷
ওই দিন রাতেই যন্ত্রণায় কাতর অবস্থায় সাংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘চার-পাঁচজন চক্রান্ত করে আমাকে ধাক্কা মেরেছে৷ বাঁ পায়ে চোট পেয়েছি৷ আমি তখন গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে নমস্কার করছিলাম৷ তখন চার-পাঁচজন আচমকা আমার দরজা বন্ধ করে দেয়৷ পায়ে আমার খুব লেগেছে৷ বাঁ পা পুরো ফুলে গিয়েছে৷ জেনেবুঝে চক্রান্ত করে এটা করা হয়েছে৷ চক্রান্ত৷ তখন আমার সঙ্গে পুলিশ সুপার ছিলেন না৷ স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতা মেলেনি৷ আমার বুকে ব্যথা হচ্ছে৷’’