পুরী: গত ২০ বছরে এত ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় দেখেনি পুরীর মানুষ। শেষবার ১৯৯৯ সালে রাজ্যে এমনই এক ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু, শুক্রবার দেশের পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় ‘ফনি’র ক্ষমতাও যে কোনও অংশে কম ছিল না, তা ভালোই উপলব্ধি করলেন নীলাচলের মানুষ।
তাণ্ডব চালিয়ে ‘ফনি’ যখন থামল, তখন পুরী কার্যত ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে। শুনশান রাস্তায় গুটিকয়েক পুলিশের গাড়ি আর ভেঙে পড়া গাছ সরাতে ব্যস্ত পুরসভার ট্রাক্টর ছাড়া কাউকেই দেখা যায়নি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওয়ার তীব্রতায় পুরীর দক্ষিণে চিল্কা হ্রদ সংলগ্ন এলাকায় কয়েকশো গাছ ভেঙে পড়ে। পার্শ্ববর্তী সমুদ্রতটে থাকা দোকানগুলির লোহার শাটার পর্যন্ত উড়ে গিয়ে রাস্তায় এসে পড়ে।
প্রায় ২ লক্ষ মানুষ বসবাস করেন পুরীতে। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পেয়েই বহু মানুষ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শহর ছাড়তে তৎপর হয়ে পড়েন। পর্যটক ও পুণ্যার্থীদের জন্য আলাদা করে তিনটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, উপকূলীয় রুটগুলিতে দু’শোরও বেশি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু, প্রশাসনের নির্দেশ মেনে শহর খালি করতে রাজি হননি কয়েক হাজার পুরীবাসী। তাঁদের স্থানীয় স্কুলবাড়ি এবং হোটেলে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। বছর তেতাল্লিশের কৃষ্ণচন্দ্র সাহু পরিবারের সাত সদস্যকে নিয়ে এমনই একটি স্কুলবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি জানান, বাড়িতে নিজেদের নিরাপদ মনে হচ্ছিল না। তাই পরিবার নিয়ে এখানে চলে এসেছেন। কিন্তু, ঝড়ের তীব্রতা কমলেই ফের বাড়ির দিকে রওনা দেবেন। তাঁর কথায়, ‘বাড়ি না ফিরে উপায় নেই।’