নিজস্ব প্রতিনিধি: চিনে নতুন করে যেভাবে করোনা মাথাচাড়া দিয়েছে তাতে উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। আর সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন থেকেই নড়েচড়ে বসছে ভারত। বর্তমানে ভারতে দৈনিক করোনা সংক্রমণ কার্যত নেই বললেই চলে। দৈনিক সংক্রমণ দু’শোর নিচেই রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকরা ভাল করেই জানেন নতুন করে করোনার ঢেউ আছড়ে পড়লেই সেই সংখ্যাটাই লাফিয়ে লাফিয়ে দৈনিক দু-তিন লক্ষ পেরিয়ে যেতেই পারে। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসক মহল। এই আবহের মধ্যেই বড়দিনে কলকাতা তথা দেশ জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ মাস্ক ছাড়াই পথে বেরিয়ে পড়লেন। বড়দিনের আনন্দ তাঁরা যখন দেদার লুটতে ব্যস্ত, তখন চিকিৎসকরা নতুন করে করোনার বিপদ নিয়ে রীতিমতো প্রমাদ গুণতে শুরু করেছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সামান্যতম করোনা বিধি না মেনে আনন্দ করতে ব্যস্ত। আর তাতেই চিন্তা বাড়ছে।
চিনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন থেকেই দেশবাসীকে ফের মাস্ক পরার আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সঙ্গে প্রত্যেকটি রাজ্য যাতে দৈনিক করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ায় সেটাও জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, কারও শরীরে করোনার হদিস মিললে সেটির যাতে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয় সেই বার্তাও দিয়েছেন মোদি। এছাড়া আগের মতোই করোনা রুখতে দূরত্ব বিধি মানা ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের উপর জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
চিনে করোনাভাইরাসের যে নতুন প্রজাতির খোঁজ মিলেছে সেটি হল ওমিক্রন বিএফ.৭। ভারতে ইতিমধ্যেই চারজনের দেহে এই প্রজাতির খোঁজ মিলেছে। তাঁরা ওড়িশা এবং গুজরাটের বাসিন্দা। গুজরাটের বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টারে এই উপরূপের খোঁজ মিলেছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগী ১৫ থেকে ২০ জনকে সংক্রমিত করতে পারেন বলে বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন। সেখানে ভারতে করোনার ডেল্টা রূপ যখন ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছিল তখন তার সংক্রমণের ক্ষমতা পাঁচের কাছাকাছি ছিল।
এরপরই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। পরিস্থিতি যাতে আগামী দিনে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় সে জন্য এখন থেকেই করোনা সম্পর্কিত যাবতীয় বিধি-নিষেধ মানার কথা বলছে কেন্দ্র। কিন্তু বড়দিনের ছবি তা বলছে না। সামান্যতম বিধি-নিষেধ মানার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি কেউ। এরপর আসছে বর্ষবরণ পর্ব। সেই সঙ্গে নববর্ষ উদযাপন। আবারও রাস্তাঘাট, ময়দান, ক্লাব, রেস্তোরাঁ, শপিং মলে লক্ষ লক্ষ মানুষকে চুটিয়ে আনন্দ করতে দেখা যাবে। আর তাতেই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই মানুষ সচেতন না হলে করোনার নতুন ঢেউ ভারতে আটকানো যাবে না। তাই নতুন বছরে অতিমারি করোনা দেশে নতুন করে আছড়ে পড়ে কিনা সেটাই দেখার।