ইংরেজবাজার: করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে বিপর্যস্ত হয়েছিল সারাদেশ। প্রথম বারের থেকে পরিস্থিতি এবার আরও ভয়ানক হয়েছিল। সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ছিল বেশি। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি ঠিক হয়েছে। সংক্রমণের হার কমেছে। তবে দ্বিতীয় ঢেউর ধাক্কা সামলাতে লেগেছে ১০০ দিনের বেশি সময়। কিন্তু এত কিছুর পরেও মানুষ সচেতন হয়নি। প্রথম বারের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়নি মানুষ। তাই পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক করতেই চারিদিকে মানুষের অসচেতনতার ছবি ধরা পড়ছে। ঠিক যে ভুলটা মানুষ প্রথম ঢেউর করেছিল। সেটাই আবার করছে। মানুষের চরম অসচেতনতার ছবি দেখা গেল মালদহ জেলার হরিশচন্দ্রপুরে।
জেলার যে এলাকাগুলোতে করোনার প্রকোপ ছিল সব থেকে বেশি তার মধ্যে একটি হলো হরিশ্চন্দ্রপুর। বহু মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছে এই এলাকায়। অনেকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই মারণ ভাইরাস। দ্বিতীয় ঢেউতে পরিস্থিতি যথেষ্ট ভয়ানক হয়েছিল। কিন্তু মানুষ শিক্ষা নেয় । এলাকার হাট বাজার,দোকান সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বেশির ভাগের মুখেই নেই মাস্ক। সামাজিক দূরত্বের কোনও বালাই নেই। সম্পূর্ণ ভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সামনে বসছে হাট। কিন্তু হাটের ছবি দেখলে চক্ষু চড়ক গাছ হবে। বহু মানুষের ভিড় হচ্ছে। কিন্তু বেশির ভাগের মুখে মাস্ক নেই। মানুষ জনের এমন ধারণা যেন করোনা সম্পূর্ণ রূপে বিদায় নিয়ে নিয়েছে দেশ থেকে। এদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালেও রোগীদের প্রচন্ড ভিড়। সেখানেও উপেক্ষিত হতে দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। শিশুদের কোলে নিয়ে হাসপাতালে মায়েরা। এই মুহূর্তে হাসপাতালে অনেক শিশু ভর্তি বলেও জানা যাচ্ছে।
এদিকে দরজায় কড়া নাড়ছে তৃতীয় ঢেউ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার সাবধান করছেন। চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, তৃতীয় ঢেউতে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হতে পারে। আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। তাই সরকার এবং স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মানুষকে বারবার সচেতন থাকতে বলা হচ্ছে। কিন্তু হরিশ্চন্দ্রপুরে যেভাবে মানুষের অসচেতনতার ছবি দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে এলাকার তৃতীয় ঢেউতে অবস্থা কেমন হবে তা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকার সচেতন মানুষেরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও মানুষের কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে যাতে মানুষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি টুকু মেনে চলে। তবে সেটা না করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাস্ক না পড়লে মিলবে কড়া দাওয়াই। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনটাই জানানো হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন,” করোনার প্রকোপ একটু কমতে মানুষ অচেতন হয়ে গেছে। কিন্তু এমন করলে ভুল হবে। তৃতীয় ঢেউ আরও ভয়ানক হতে পারে। তাই অনুরোধ করব মানুষ যাতে মাস্ক পরে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলে। কিন্তু তা না করলে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেবে। মানুষের ভালোর জন্য প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।” করোনার প্রথম থেকেই পুলিশ প্রশাসন বারবার মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু মানুষ নিজে সচেতন না হলে কিছু করার নেই। দ্বিতীয় ঢেউ আসার আগে মানুষ যা ভুল করেছিল তার খেসারত দিতে হয়েছে। শুধু সরকার প্রশাসন একা করোনাকে হারাতে পারবে না। সকলে একসাথে মিলে করোনা মুক্ত দেশ গড়তে হবে।