কলকাতা: রোজ রোজ রুটি, ফল এ সব আর কিছুতেই মুখে রুচছে না তাঁর৷ তিনি বরাবরই খাদ্য রসিক মানুষ৷ ভালোমন্দ খেতে ভালোবাসেন৷ কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ৷ তার উপর এখন এমনিতেই মানসিক চাপে রয়েছেন৷ মন্ত্রীত্ব থেকে দলীয় পদ, খুইয়েছেন সর্বস্ব৷ লাগাতার সহ্য করতে হচ্ছে ইডি-র প্রশ্নবান৷ এর উপর খাওয়া নিয়ে বায়নাক্কা৷ কী করে তাঁর আবদার রাখেন ইডি-র কর্তারা? পাছে সুগারের মাত্র বেড়ে যায়! অসুস্থ হয়ে পড়েন ৬৯ বছরের প্রাক্তন মন্ত্রী৷ তবে সে সব মানতে নারাজ তিনি৷ অফিসারদের সঙ্গে খাওয়া নিয়ে নিত্য ঝামেলা চলছে তাঁর৷ এমতাবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে ডাক পড়ল ‘ম্যাডাম অর্পিতার’! হ্যাঁ, এই নামেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে সম্বোধন করেন ইডি-র অফিসাররা৷ শেষমেষ সেই দাওয়াইয়েই হল কাজ৷
আরও পড়ুন- ‘বিজেপি চোরকে বাঁচাচ্ছে’, শুভেন্দুকে নিয়ে বিস্ফোরক কুণাল
কিন্তু কী এমন আবদার করেছিলেন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়? জানা গিয়েছে, তিনি নাকি পাতে একটু ভাত চেয়েছিলেন৷ কিন্তু, ডায়াবেটিসের কথা ভেবে কিছুতেই তাঁকে ভাত দিতে নারাজ ইডি-র কর্তারা৷ ইডি সূত্রে খবর, খাওয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার বেশ ঝামেলা পোহাতে হয় তাঁদের৷ ভাত না দিলে কিছুতেই তদন্তে সহযোগিতা করবেন না বলে বেঁকে বসেন তিনি৷ বলেন, ভাত না দিলে কোনও প্রশ্নের জবাব দেবেন না তিনি৷ অনেক বুঝিয়েও কাজ না হওয়ায় উপায় বার করলেন মহিলা আধিকারিকরাই৷
সূত্রের খবর, এর পর গোটা বিষয়টা অর্পিতাকে গিয়ে জানান অফিসাররা৷ শুনেই বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন অর্পিতা৷ খাওয়া-দাওয়ায় এমন অনিয়ম করলে তো অসুস্থ হয়ে পড়বেন ‘পার্থ দা’! অফিসারদের কথায় রাজি হয়ে যান পার্থকে বোঝানোর জন্য। কাছে গিয়ে তিনি খানিক ধমকের সুরেই বলেন, ভাত খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে৷ তাঁর ওই টুকু কথাতেই মিটল কাজ। অফিসারদের সঙ্গে ঝামেলা করলেও ‘ম্যাডামে’র কথা ফেলতে পারলেন না পার্থ৷ ভাত খেলেন ঠিকই, তবে অল্প।
এদিন ধমক দিয়ে অর্পিতা বলেন, অসুস্থ হয়ে পড়লে আইনি লড়াইটা লড়বেন কী ভাবে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য আইনি লড়াইয়ের কথা মনে করাতেই বয়না ভুলে লক্ষ্মী ছেলের মতো খেয়ে নেন পার্থ৷ অল্প ভাত খেয়েই সন্তুষ্ট থাকেন তিনি৷ শুক্রবার সকালেও ইডি অফিসারদের কথা মতোই খাবার খেয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী৷ ভুবনেশ্বর এইমসে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে যখন নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তখন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, টাইপ ২ ডায়াবেটিস রয়েছে পার্থর৷ তাই ভাত তাঁর স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে৷ ওষুধের পাশাপাশি ফল আর প্রচুর তরল খেতে হবে তাঁকে। সেই মতোই খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ কিন্তু পাতে রুটি, ফল দেখেই শুরু হয় তাঁর বায়না৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>