ফেসবুকে চরম বিদ্রোহের শিকার শিক্ষামন্ত্রী, ‘কমেন্ট’ উড়িয়ে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’র চেষ্টা?

ফেসবুকে চরম বিদ্রোহের শিকার শিক্ষামন্ত্রী, ‘কমেন্ট’ উড়িয়ে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’র চেষ্টা?

bb23a817c977f2010db6d0223d95fa2c

 

কলকাতা: ক্ষোভ-বিক্ষোভ-বিদ্রোহ আগেই ছিল৷ নিয়োগের দাবিতে হোক কিংবা বেতন বৃদ্ধি, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বারংবার পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন শিক্ষাক্ষেত্রে নিযুক্ত রাজ্যের বহু কর্মচারী থেকে শুরু করে চাকরিপ্রার্থীরা৷ প্রত্যাশা, প্রতিশ্রুতি, আশার বাণী, বারংবার থামিয়ে দিয়েছে সেই সমস্ত ক্ষোভের আগুন৷ কিন্তু করোনা মহামারী পরিস্থিতি কার্যত বদলে দিয়েছে৷ করোনা মহামারীর জেরে গৃহবন্দি থেকেও সেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ সোশ্যাল মিডিয়ায় জাহির করতে শুরু করেছিলেন বাংলার প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থী থেকে শুরু করে, টেট ও অতিথি অধ্যাপকদের একাংশ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় নজিরবিহীন বিদ্রোহের মুখে পড়েছিলেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ উঠেছিল কমেন্টের ঝড়৷ এবার সেই কমেন্টের ঝড় থামিয়ে নিজের প্রোফাইল থেকে ‘মন্তব্যে’র অংশ উড়িয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী৷

করোনা মহামারীর আবহে বেশ কিছুদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় চাকরিপ্রার্থী থেকে শুরু করে অতিথি অধ্যাপক মহলের একাংশের নিশানায় ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ শিক্ষামন্ত্রীর যে কোনও পোস্ট করলেই শুরু হয়ে যাচ্ছে কমেন্টের বন্যা৷ শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যে নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরার চেষ্টা করতে থাকেন চাকরিপ্রার্থী থেকে শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের একাংশ৷

গত ২৬ এপ্রিল থেকে বিষয়টি মারাত্মক আকার ধারণ করতে শুরু করে৷ গত ২৬ এপ্রিল শিক্ষামন্ত্রী একটি পোস্টে চাকরির দাবি-সহ অন্যান্য প্রায় ৩২০০টি মন্তব্য উড়ে আসে৷ ২৭ এপ্রিল কমেন্টে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪২০০টি৷ ২৮ এপ্রিল কমেন্ট একধাক্কায় বেড়ে দাঁড়ায় ৯৫০০টি৷ ৩০ এপ্রিল ইউজিসি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী পোস্টে প্রায় ১০ হাজার কমেন্ট উড়ে আসে৷ নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে শ্রমিক দিবসে শিক্ষামন্ত্রীর পোস্টকে কেন্দ্র করে৷ শ্রমিক দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে একটি পোস্ট করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ সেখানে ৪২ হাজার কমেন্টের মুখোমুখি হন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ একই ধারা অব্যাহত ছিল ২ মে৷ কোটা থেকে ফেরা পড়ুয়াদের অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পোস্টেও ২৭ হাজার কমেন্ট শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ালে উড়ে আসে৷ লাগাতার এইভাবে প্রোফাইলে কমেন্টের জেরে বেশ বিরক্ত হন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ আজ দুপুর দু’টো ১৯ মিনিটে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজেরের তরফে দু’লক্ষ টাকা অনুদান সংক্রান্ত একটি পোস্ট করেন শিক্ষামন্ত্রী৷ পোস্ট হতে না হতেই উড়ে আসে একের পর এক কমেন্ট৷ প্রায় ১৩০০ কমেন্ট উড়ে আসতেই কার্যত বিরক্তি হয়ে ‘মন্তব্যে’র জায়গাটি ফেসবুক থেকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে কার্যত বাধ্য হন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷

35bc46a28b73f60af94bca28af1c9556

কিন্তু হঠাৎ কেন এই কমেন্টের ঝড়? কমেন্টের ঝড় প্রযুক্তগত ভাবে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হলেও বাস্তবে বিদ্রোহ কি কমবে? মহামারীর আবহে ফেসবুকে কেন বিদ্রোহের শিকার শিক্ষামন্ত্রী? পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, করোনা মহামারীর পরিস্থিতিতে বাংলার কর্মসংস্কৃতির উজ্জ্বল বিজ্ঞাপন কার্যত ধরাশায়ী৷ লক্ষ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি আজ কার্যত বিপরীমুখী৷ মহামারীর আবহে কাজের দাবি, ভাতের দাবি যেন আরও একবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷ ‘কমেন্ট’ উড়িয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করলেন শিক্ষামন্ত্রী? প্রশ্ন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নজিরবিহীন বিদ্রোহের মুখে শিক্ষামন্ত্রী, ২ ঘণ্টায় ৪,২০০ কমেন্ট পার্থর দেওয়ালে

নজিরবিহীন বিদ্রোহের মুখে শিক্ষামন্ত্রী, ২ ঘণ্টায় ৪,২০০ কমেন্ট পার্থর দেওয়ালে

140771103813ffd2eb7315b3c7bc073d

 

কলকাতা: ক্ষোভ-বিক্ষোভ-বিদ্রোহ আগেই ছিল৷ নিয়োগের দাবিতে হোক কিংবা বেতন বৃদ্ধি, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বারংবার পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন শিক্ষাক্ষেত্রে নিযুক্ত রাজ্যের বহু কর্মচারী থেকে শুরু করে চাকরিপ্রার্থীরা৷ প্রত্যাশা, প্রতিশ্রুতি, আশার বাণী, বারংবার থামিয়ে দিয়েছে সেই সমস্ত ক্ষোভের আগুন৷ কিন্তু করোনা মহামারী পরিস্থিতি কার্যত বদলে দিয়েছে৷ করোনা মহামারীর জেরে গৃহবন্দি থেকে এবার সেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ সোশ্যাল মিডিয়ায় জাহির করতে শুরু করে দিয়েছেন উচ্চ প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থী থেকে শুরু করে, টেট ও অতিথি অধ্যাপকদের একাংশ৷

আজ বিকেল ৩টে ৫৩ মিনিটে ইউজিসি প্রস্তাব নিয়ে একটি মন্তব্য ফেসবুকে প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে ইউজিসি বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে৷ সেই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে ফেসবুক পোস্ট করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ কিন্তু ফেসবুক পোস্ট করার দু’ঘণ্টার মধ্যেই বিক্ষোভ নিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা থেকে অধ্যাপক সকলেই ঝাঁপিয়ে পড়েন৷ দু’ঘণ্টার মধ্যে প্রায় চার হাজার বেশি মন্তব্য উড়ে আসে শিক্ষামন্ত্রীকে কেন্দ্র করে৷ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফেসবুক পোস্টে ৬৩৪ জন লাইক করেছেন৷ ১০২ জন শেয়ার করেছেন এবং ৪ হাজারের বেশি কমেন্ট করেছেন৷

শিক্ষামন্ত্রী প্রোফাইলে চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে কমেন্টের ধরণ৷ অধিকাংশ রয়েছে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়ে৷ দীর্ঘ ৭ বছর ধরে অপেক্ষায় রয়েছি৷ এখনও যদি নিয়োগ না হয় জীবন শেষ হয়ে যাবে৷  আপডেট সিটে করে দয়াকরে নিয়োগ করুন৷ শিক্ষামন্ত্রী প্রোফাইলে আর্জি জানিয়েছেন দিলীপ গিরি৷ এছাড়াও চাকরিপ্রার্থীদের বাড়িতে বসে পোস্টার প্রতিবাদেরও ঝড় ওঠে শিক্ষামন্ত্রীর পোস্ট ঘিরে৷বহু চাকরিপ্রার্থী তাঁদের পোস্টার হাতে শিক্ষামন্ত্রী ওয়ালে গিয়ে কমেন্ট করেছেন৷ সবারই একটাই দাবি, অবিলম্বে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ করুন৷

5d62c4910f949a2d8c12edf5ea37adbb

একই সঙ্গে অতিথি অধ্যাপকরাও শিক্ষামন্ত্রীর ফেসবুক প্রোফাইলে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন৷ অনেকেই বলছেন, আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি৷ দয়া করে আপনি অনলাইনে অতিথি শিক্ষকদের অনুমোদন দেওয়ার ব্যবস্থা করুন৷ এই দুর্দিনে আর্থিক অনটন থেকে পরিবারকে বাঁচাতে পারবো না৷ অনেকেই বলছেন তাঁরা নির্দিষ্ট সময়ে বেতন পাচ্ছেন না৷  একইসঙ্গে প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণদের বিষয়টিও শিক্ষামন্ত্রী ওয়ালে ফুটে উঠেছে৷ ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে৷ একই সঙ্গে টেট পরীক্ষার আবেদন নেওয়া হলেও, পরীক্ষার দিনক্ষণ এখনও অধরা৷ টেট পরীক্ষা কবে হবে, তার দাবিও জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷

কিন্তু হঠাৎ কেন এই কমেন্টের ঝড়? ফেসবুকে কেন বিদ্রোহের শিকার? পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, করোনা মহামারীর পরিস্থিতিতে বাংলার কর্মসংস্কৃতির উজ্জ্বল বিজ্ঞাপন কার্যত ধরাশায়ী৷ লক্ষ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি আজ কার্যত বিপরীমুখী৷ মহামারীর আবহে কাজের দাবি, ভাতের দাবি যেন আরও একবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *