কলকাতা: শুক্রবার দুপুর প্রায় আড়াইটা। দুপুরের খাওয়ার পাঠ শেষ করে যখন একটু একটু করে ভাতঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছে তিলোত্তমা, ঠিক তখনই একের পর এক গুলির শব্দে কেঁপে উঠল কলকাতার পার্ক সার্কাস ও বেকবাগান চত্বর। এদিন দুপুরে হঠাৎই এক সশস্ত্র পুলিশ কর্মী বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। তার গুলির আঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক মহিলার। শেষে নিজের সার্ভিস রিভলবার দিয়ে গুলি খেয়ে আত্মঘাতী হন ওই পুলিশকর্মী। এই হামলার ঘটনার আকস্মিকতায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহর কলকাতায়। হঠাৎ কেন ওই পুলিশ আধিকারিক গুলি ছুঁড়লেন এবং শেষে তিনি কেনইবা আত্মঘাতী হলেন আপাতত সকলেই খুঁজছেন এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর। অবশেষে সামনে এল হামলাকারী ওই পুলিশকর্মী পরিচয়।
জানা যাচ্ছে শুক্রবার দুপুরে পার্ক সার্কাস চত্বরে যে পুলিশকর্মী এই বন্দুক হামলা চালিয়েছে তার নাম চোরুপ লেপচা। তিনি কাজ করতেন কলকাতা পুলিশের সশস্ত্রবাহিনীর পঞ্চম ব্যাটেলিয়ানে। মৃত চোরুপ উত্তরবঙ্গের কালিম্পংয়ের বাসিন্দা। মাত্র সপ্তাহ খানেক আগেই তাকে বেকবাগানের কাছে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের আউটপোস্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে বহাল করা হয়েছিল।
এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিগত কয়েক দিন বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাইরে ওই পুলিশকর্মীকে পাহারা দিতে দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে গত শুক্রবার তিনি হাই কমিশনের অনতিদূরে অবস্থিত আউটপোস্ট কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু দুপুর আড়াইটা নাগাদ হঠাৎই তিনি আউটপোস্ট থেকে বেরিয়ে আসেন এবং নিজের সার্ভিস রিভলভার উঠিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করেন। ঠিক তখনই উল্টো দিকের রাস্তা দিয়ে আসছিল একটি বাইক। অ্যাপভিত্তিক ওই বাইকের পিছনের সিটে সওয়ার ছিলেন এক মহিলা। ওই পুলিশকর্মীর ছোঁড়া গুলি সোজা গিয়ে মহিলার মাথায় লাগে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। অন্যদিকে বাইক চালকরও পিঠে গুলি লেগেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এরপর যখন গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে এদিক ওদিক ছুটতে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ঠিক তখনই নিজের সার্ভিস রিভলবার দিয়েই গলার কাছে গুলি খেয়ে আত্মঘাতী হয় ওই হামলাকারী পুলিশকর্মী।
এই আকস্মিক ঘটনায় হতবাক কলকাতা পুলিশও। ঘটনা প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, হামলাকারী ওই পুলিশকর্মী সম্ভবত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সেই কারণেই তিনি এই হামলা করে থাকতে পারেন। তবে এখনই নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।