বর্ধিত বেতনে উধাও DA, অনিশ্চিত বকেয়া! চূড়ান্ত অসন্তোষ কর্মচারী মহলে!

রিভিশন অব পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্স (রোপা) ২০১৯-এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে এই আশঙ্কাই তৈরি হয়েছিল। আর এবার বেতন হাতে পাওয়ার পর সেটাই সত্যি হলো। নতুন নিয়মের আওতায় অর্থ দপ্তরের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এইচআরএমএস) পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্স থেকেই তুলে নেওয়া হয়েছে ডিএ-র কলাম।

কলকাতা:  চলতি মাসেই প্রথমবার ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন পেলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। যথারীতি সেখানে নেই কোনো ডিএ-র উল্লেখ। আশঙ্কা ছিলই।  রিভিশন অব পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্স (রোপা) ২০১৯-এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে এই আশঙ্কাই তৈরি হয়েছিল। আর এবার বেতন হাতে পাওয়ার পর সেটাই সত্যি হল। সরকারি কর্মীরা মূল বেতনের সঙ্গে তিন ধরনের ভাতা পান। কিন্তু নতুন নিয়মের আওতায় অর্থ দপ্তরের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এইচআরএমএস) পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্স থেকেই তুলে হয়েছে ডিএ-র কলাম।
 

ডিএ, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা। এ ছাড়াও বিশেষ ভাতা রয়েছে। সেগুলি হল পাহাড়ে কর্মরত কর্মীরা পান হিল অ্যালাওয়েন্স, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার জন্য আরএ, চিকিৎসকরা নন প্র্যাকটিসিং অ্যালাওয়েন্স। যে সব সরকারি কর্মী কোয়ার্টারে থাকেন, তাঁরা বাড়ি ভাড়া ভাতা পান না। কিন্তু ডিএ না থাকায় বেতন কিছুটা কমে যাবে।

গত ২৬ জুলাই রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল (স্যাট) ডিএ মামলার রায়ে জানিয়েছিল, ডিএ-র ভিত্তি ‘কনজ়িউমার প্রাইস ইনডেক্স’। ডিএর পরিমাণ কত, তা ৩ মাসে নির্ধারণ এবং ৬ মাসে কার্যকর করতে হবে। বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে ১ বছরে। স্যাট আরও বলেছিল, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের পরে বছরে দু’বার ডিএ দিতে হবে এবং তাতে বৈষম্য চলবে না। কর্মচারী থেকে বিরোধী কর্মচারী সংগঠনগুলির বক্তব্য, অতীতের সমস্ত রোপা-তে ডিএ-র উল্লেখ থাকত কিন্তু এই প্রথমবার তা না-থাকায় আগামী দিনে হয়তো স্যাটের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাবে সরকার। কর্মচারীদের একাংশের মতে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশে ঠিক কি কি আছে রিপোর্ট কার্যকরের আগে তা জনসমক্ষে আনা জরুরি ছিল।

অনেকের মতে অল ইন্ডিয়া প্রাইস ইন্ডেক্স বা মূল্য সূচককে ভিত্তি করে ডিএ স্থির হয়। তাই দিয়ে সরকারি কর্মীদের অধিকারের মধ্যে পড়ে, কথা জানিয়েছিল হাইকোর্ট। যখন পঞ্চম বেতন কমিশন চালু হয় তখন ১৬ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ দেওয়া হয়েছিল। এবার ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু হওয়ায় ২১ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা হওয়ার উচিত ছিল৷ কিন্তু এবারই প্রথম কর্মচারীরা কোনও ডিএ ছাড়া নতুন কাঠামোয় বেতন পেলেন। 

এদিকে পেশেন্টের উল্লেখ না থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে সমালোচনার ঝড়। সারাদিন কে ইতিহাসে ব্যতিক্রমী ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন কেউ। অনেকেই জলপথে আন্দোলনে নামার কথা বলেছেন। তবে ফেসবুক ওয়ালে সবথেকে বেশি সমাদৃত হয়েছে ডিএ-কে লেখা 'রোপা'র চিঠি- 'প্রিয়তম ডিএ, শুরু হল তোমাকে ছাড়া আমার পথ চলা। ফেলে আসা অতীতকে সম্বল করে সম্পূর্ণ খালি হাতে আগামীর পথে যাত্রা শুরু করলাম। বড় কঠিন এই যাত্রাপথ। যেখানেই থেকো, ভালো থেকো। ইতি, তোমার রোপা ২০১৯।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *