কলকাতা: লকডাউনের আওতা থেকে এবার মিষ্টির দোকানকেও ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে পর্যালোচনা বৈঠকে দিনের কিছুটা সময় মিষ্ঠির দোকান খুলতে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আমরা বাঙালি, মিষ্টি খেতে ভালবাসি। পাশাপাশি, যে চাষিদের দুধ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেটাও আমাদের দেখতে হবে। তাই জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অল্প অল্প করে মিষ্টির দোকান খোলা থাক। বেলা ১২টা থেকে ৪টে পর্যন্ত দোকান খোলা থাকবে।’
লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে দুধ বিক্রেতা চরম সমস্যায় পড়েন। কারণ মিষ্টির দোকানগুলোই তাদের সব থেকে বড় গ্রাহক । দুধ নর্দমায় ফেলে দিতে বাদ্য হওয়ার পাশাপাশি আয না হলে তারা গবাদি পশুদের প্রতিপালনের খরচ চালাবেন কিভাবে সেপ্রশ্নও বড় হয়ে দেখা দেয়।রাজ্যে দৈনন্দিন উত্পাদিত দুধের একটা বড় অংশ দিয়েই তৈরি হয় ছানা। যা থেকে প্রধানত মিষ্টি তৈরি হয়। এখন লকডাউনে মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকায় ছানার চাহিদা নেই। তার ফলে দুধেরও বিক্রি নেই। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেই আংশিক সময়ের জন্য হলেও মিষ্টি বিক্রি শুরু করতে চায় রাজ্য। তবে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে দুধ বিক্রতারা উপকৃত হলেও অন্য আশঙ্কা করছেন অনেকে। তাদের মতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিশ সংগ্রহের নামে প্রতিদিন বহু মানুষ বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন। এর পর মিষ্টির দোকানও তালিকায় যুক্ত হলে এক শ্রেণির দ্বায়িত্বজ্ঞানহিন মানুষ রাস্তায় ভিড় করার নতুন অজুহাত পাবেন। যাতে আদতে লকডাউনের উদ্দেশ্যই ব্যহত হবে বলে তাদের অভিমত।
কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণা মতো ২১ দিনের লকডাউন শেষ হচ্ছে ১৪ এপ্রিল। সেদিন বাংলা নববর্ষ। সেটা আবার বাঙালির কাছে বড় উৎসব। সেটা যাতে একেবারে মাটি না হয় সেটাও রাজ্য সরকার ভাবছে বলে এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন ১৩ এপ্রিল এ নিয়ে আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে সরকার। এই প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রিভিউ করে যা দেখা যাচ্ছে তাতে আগামী দু’টো সপ্তাহ সেনসিটিভ। লকডাউনের মধ্যেই পয়লা বৈশাখ আছে। ওইদিন কিছুটা ছাড় দেওয়া হতে পারে। সেটা আমরা ১৩ এপ্রিল বসে আলোচনা করে জানাবো।’ তবে তার আগে সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর জোগান ঠিক থাকা চাই। মমতা বলেন, ‘আমি চাই পাড়ায় পাড়ায় মুদির দোকানগুলি খোলা থাক। মুদির দোকানদার যেখান থেকে মাল আনে সেগুলিও খোলা থাক। ওষুধের দোকান থেকে জরুরি পরিষেবা সব খোলা থাকবে।’