মনোনয়ন পেশে সাহায্য করতে হবে দুই থানাকে, কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ কতটা তাৎপর্যপূর্ণ?

মনোনয়ন পেশে সাহায্য করতে হবে দুই থানাকে, কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ কতটা তাৎপর্যপূর্ণ?

 

নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র পেশে যে তুলকালাম পরিস্থিতি টানা চলল তাতে স্তম্ভিত সব মহল। এরকমটা যে হবে সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে মনোনয়ন জমা দিতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আইএসএফের তিন প্রার্থী। সেই সূত্রে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশে জানিয়েছেন, ওই তিন প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র পেশের ব্যাপারে পুলিশকে সাহায্য করতে হবে। এর জন্য ভাঙড়ের কাশীপুর এবং ভাঙড় থানার পুলিশকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা।

 

বিচারপতির নির্দেশ, নির্বিঘ্নে যাতে ওই তিনজন মনোনয়ন পেশ করতে পারেন সেই ব্যবস্থা পুলিশকে করতে হবে। শুধু তাই নয়, রাজ্যের অন্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও এমন অভিযোগ উঠলে তাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিচারপতি জানিয়েছেন কমিশনের এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে জেলার পুলিশ সুপারকে। রাজ্য পুলিশের ডিজি এই নির্দেশ যাতে সমস্ত জেলার এসপিদের দেন, সে কথাও  জানিয়েছেন বিচারপতি। উল্লেখ্য মঙ্গলবার মনোনয়ন পেশকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে ভাঙড়। তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় আইএসএফ। মনোনয়ন পেশে বাধা পেয়েছেন দলের একাধিক কর্মী, এই অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতেই পুলিশকে এদিন বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা।

 

এদিকে উত্তর চব্বিশ পরগনার মিনাখাঁয় মনোনয়নপত্র পেশের সময় সিপিএম কর্মীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে‌ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সিপিএম। তাতে বসিরহাটের পুলিশ সুপারের রিপোর্ট তলব করেছে আদালত।

 

তাই প্রশ্ন উঠছে মনোনয়নের দিন  পেরিয়ে গিয়ে যাওয়ার পর যে বা যারা মনোনয়ন জমা দিতে  পারবেন না তাঁরা কি সকলেই আদালতের দ্বারস্থ হয়ে মনোনয়ন পেশ করতে পারবেন? ইতিমধ্যেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন যারা মনোনয়ন দিতে পারবেন না তাঁরা যেন দল বেঁধে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে এসে মনোনয়ন দেন। শেষপর্যন্ত যদি সেটাই হয় তাহলে কি অসম্ভব চাপে পড়ে যাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন তথা প্রশাসন?

এখনও পর্যন্ত যা দেখা গিয়েছে তাতে বোঝা যাচ্ছে বিরোধীরা মনোনয়ন পেশের ব্যাপারে একেবারেই হাল ছাড়েনি। বিরোধীদের এই অনড় মনোভাব গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কিন্তু দেখা যায়নি। তাই এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব সব অর্থেই বেশ ঘটনাবহুল বলে রাজনৈতিক মহল মনে করে। তাই এটা নিশ্চিত করে বলা যায় নাটকের এখনও অনেক কিছু দেখার বাকি আছে। যেদিকে নজর রয়েছে বাংলার রাজনীতি সচেতন মানুষজনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six + 1 =