কলকাতা: তীর্থ যাত্রী ও পর্যটকদের জন্য বিরাট সুখবর। জলপথে এবার মাত্র কয়েক ঘণ্টায় কলকাতা থেকে পৌঁছে যাওয়া যাবে গঙ্গাসাগর অথবা সুন্দরবন।চলতি সপ্তাহেই কলকাতা থেকে গঙ্গাসাগর বিশেষ ক্রুজ পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে বলে রাজ্য পরিবহন দফতর সূত্রে খবর।
শুধুমাত্র এরাজ্য নয় সারা দেশের হিন্দু ধর্মের মানুষের কাছে গঙ্গাসাগর অত্যন্ত পবিত্র তীর্থ স্থল। বর্তমানে সাগর দ্বীপকে ধর্মীয় স্থানের পাশাপাশি পর্যটক আকর্ষনের কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে।আর দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনানী চিরন্তন আকর্ষনের কেন্দ্র। কিন্তু গঙ্গাসাগরকে সাধারণ পর্যটকদের কাছে আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু করে তোলার ক্ষেত্রে সবথেকে বড় বাধা দূর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা। সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার- এই প্রবাদ বহুকাল ধরেই বাঙালী সমাজে প্রচলিত।
বর্তমানে আধুনিক যানবাহনের কল্যাণে যাত্রাপথে বিপদ কমেছে কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সাগরে পৌঁছোন এখনও বেশ কষ্টসাধ্য। সেই কষ্ট লাঘব করতে রাজ্যের রাজধানী থেকে জলপথে সাগরকে সরাসরি যুক্ত করার ভাবনা। আগামী শুক্রবার কলকাতা থেকে সাগর পর্যন্ত বিলাসবহুল ক্রুজ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে বলে পরিবহন দপ্তর সূত্রে খবর।কলকাতারই এক বাঙালি মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মুম্বইয়ের সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে এই পরিষেবা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
পরিবহণ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে প্রতিদিন সকাল ৭টায় মিলেনিয়াম পার্ক জেটি থেকে ছাড়বে এই ক্রুজ।সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জলপথে সরাসরি পৌঁছে যাবে সাগরের কচুবেড়িয়ায়।সুন্দরবনের পর্যটকরা ওই জাহাজেই পৌঁছে যেতে পারবেন নামখানা পর্যন্ত।আবার ফিরতি পথে কচুবেড়িয়া থেকে ক্রুজ ছাড়বে বিকেল ৩:৩০ টে নাগাদ।যা রাত ৮টার মধ্যে কলকাতায় ফিরে আসবে। মাথাপিছু মাত্র ১০০০ টাকা ভাড়ায় আগ্রহী পর্যটকরা বিলাসবহুল এই জলযানে কলকাতা থেক সাগর বা নামখানায় পৌঁছে যেতে পারবেন।একই ভাড়ায় ফিরতেও পারবেন সাগর থেকে।
পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে মালয়েশিয়া থেকে নিয়ে আসা ওই বিলাসবহুল এই ক্রুজ শিপ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারবে।নদীর নাব্যতা জনিত সমস্যার কথা মাথায় রেখেই জলযানের নকশা প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মাত্র ১.৫ মিটার অংশ থাকবে জলের তলায়। আধুনিক অন্দরসজ্জায় সজ্জিত এই জলযানে ১৫৬ টি আসন রয়েছে। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জলযানটিতে রয়েছে ৪ টি অত্যাধুনিক শৌচাগার,টিভি,সিনেমা দেখানোর দুটি জায়ান্ট স্ক্রিন।যাত্রীরা সেখানে নিজেদের পছন্দ মত ক্রিকেট, ফুটবল ম্যাচ বা সিনেমা দেখতে পারবেন। পাশাপাশি তাঁদের জন্য হালকা খাওয়চা দাওয়ারও ব্যবস্থা থকছে। যার দাম টিকিটের মধ্যেই ধরা থাকবে।
গঙ্গাসাগরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সুগম করতে এর আগেই হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তার খরচ অনেক বেশি হওয়ায় আকাশপথে সাগর পৌঁছানো সাধারণ তীর্থযাত্রী বা পর্যটকদের নাগালের বাইরে।ফলে সুলভে কলকাতা থেকে সরাসরি জলপথে সাগরে যাওয়ার এই নতুন উদ্যোগ যথেষ্টই জনপ্রিয় হবে বলে পরিবহন কর্তারা আশাবাদী।