বীরভূম: একটা দিনও বাদ নেই, প্রত্যেক দিন কোথাও না কোথাও চলছে ভোটের প্রচার। আজও ভোটপ্রচারে বেরিয়েছিলেন বীরভূমের লোবা গ্রামে গ্রামে উপস্থিত হন তৃণমূল প্রার্থী৷ এলাকায় শতাব্দী রায়কে দেখতেই ফুলের পরিবর্তে পেঁয়াজের মালা নিয়ে এগিয়ে এলেন এক বৃদ্ধ৷
মালাটি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়নি কোন সুতো৷ প্রত্যেকটিতে পেঁয়াজকে একটির সঙ্গে আরেকর সঙ্গে বেঁধে বানানো হয়েছে এই মালা। দরিদ্র কৃষকের কাছ থেকে মালা পেয়ে বেজায় খুশি সাংসদ শতাব্দী রায়৷ তবে, এটা কি প্রতিবাদ, না কি উপহার! তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে৷
কেননা, ফাল্গুনের বৃষ্টিতে বেশির ভাগ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ শুকনো পেঁয়াজের দাম মন পিছু ১২০ থেকে ১৩০ টাকা মেলে। এ বার দাম পড়ে গিয়ে মন পিছু ৭০ থেকে ৮০ টাকা দাঁড়ায়। জমি থেকে পেঁয়াজ তুলে বস্তায় ভরে রাস্তায় নিয়ে যেতে কৃষকের ৫০ টাকার উপর খরচ পড়ে। সেখানে ৭০ টাকা মন পেঁয়াজ বিক্রি হলে তো কৃষক লোকসানের মুখে পড়বেনই৷ ফলে, ভোটের বাজারে পোঁয়াজের দাম না পেয়ে এই মুহূর্তে ফুঁসছে বাংলার কৃষক সমাজ৷
গত রবিবার মহাজনের থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় তিন বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন বলাগড় একতারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তেলেনিপাড়ার ভাগচাষি বাপি টুডু (৩২)। কিন্তু বসন্তের বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি এবং উৎপাদিত ফসলের দাম না পেয়ে ভেঙে পড়েন তিনি। ভাই ধর্মেন্দ্র টুডুর দাবি, ঋণদাতাদের টাকা ফেরতের তাগাদায় আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন দাদা। এই চাপেই শেষ পর্যন্ত বিষ খায় সে।
কৃষক মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভোটবাজারে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি, এ বার ফাল্গুন মাসের বৃষ্টির কারণে বলাগড়ে পেঁয়াজ ও অন্যান্য সব্জির ভয়ানক ক্ষতি হয়। কিন্তু শাসকদল কৃষকদের জন্য কিছু করেনি। বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের পাল্টা বক্তব্য, কৃষকের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি অনুচিত। ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করতে প্রতিটি ব্লকে কৃষকদের আবেদনপত্র জমা নিয়েছে সরকার।