কলকাতা: এবার বাজেট অধিবেশনের প্রথাগত ভাষণ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে পারছে না রাজ্য সরকার। বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের সূচনায় রাজ্য সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্য পাঠে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় যাতে বেঁকে না বসেন সে জন্য আগাগোড়া সচেষ্ট ছিল সরকারপক্ষ। রাজ্যের শীর্ষ মন্ত্রী থেকে শুরু করে মুখ্যসচিব দফায় দফায় রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করে বরফ গলানোর চেষ্টা করেন। তা স্বত্তেও শেষ পর্যন্ত রাজ্যের দেওয়া ভাষণের খসড়া নিয়েই আপত্তি তুলেছেন জগদীপ ধনখড়। এমনকী খসড়ায় বেশ কয়েকটি জায়গায় লেখা বদলানোর জন্যও নাকি রাজ্য সরকারকে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। অধিবেশনের শুরুতেই প্রথাগতভাবে ভাষণ দেবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের ভাষণের কপি সরকারের তরফ থেকে রাজভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, বিধানসভায় ভাষণের খসড়ায় আপত্তি রয়েছে রাজ্যপালের। বেশ কিছু জায়গায় পরিবর্তনের জন্য তিনি আবেদন জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের কাছে।
রবিবার শিক্ষামন্ত্রী তথা পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজভবনে গিয়ে দেখা করেছিলেনন রাজ্যপালের সঙ্গে। দু’জনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে আলোচনা। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের সঙ্গে দ্বিমত তৈরি হয়েছে রাজ্যপালের। আর তাই বাজেট অধিবেশনের আগে রাজ্যপালের মান ভাঙাতেই তৎপরতা নিচ্ছে রাজ্য সরকার। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর মঙ্গলবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যসচিব রাজীবা সিনহা। প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক ধরে তাঁদের মধ্যে চলে আলোচনা। বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্যপালের সচিব সতীশচন্দ্র তিওয়ারিও।
প্রথাগত নিয়মানুযায়ী বাজেট অধিবেশন শুরুর আগেই রাজ্যপাল বিধানসভায় গিয়ে কিছু ভাষণ দেন। মূল রাজ্যই সেই ভাষণের খসড়া দিয়ে আসে রাজভবনে। সেই খসড়া অনুযায়ী ভাষণ দেন রাজ্যপালরা। জগদীপ ধনখড় এরাজ্যে দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে নানা বিষয়ে দূরত্ব বাড়তে থাকে রাজ্য সরকারের। শিক্ষা, স্বাস্থ্য-সহ একাধিক বিষয়ে নানা অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যেই ধনখড় তুলোধনা করেন রাজ্য প্রশাসনকে। পালটা তোপ দেগে রাজ্যপালের সমালোচনায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তাঁর মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা। বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের আগে বক্তৃতা করতে উঠে রাজ্যের বিরুদ্ধে ফের তোপ দাগতে পারেন জগদীপ ধনখড়। সেই আশঙ্কা করেই গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যপালের মান ভাঙাতে তৎপরতা দেখা গিয়েছে রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হল না। রাজ্যের পাঠানো ভাষণের খসড়ায় আপত্তি তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।