কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকার দেশের নিরাপত্তা কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন। কলকাতার রাজারহাটে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের ২৯ স্পেশাল কম্পোজিট গ্রুপ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করে তিনি বলেন সন্ত্রাসবাদ দমনে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। এই সরকারের আমলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক , এয়ার স্ট্রাইক হয়েছে। দেশের সুরক্ষায় এন এস জি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন। সরকার ভবিষ্যতে এই বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে চাইছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ' জিরো টলারেন্স' এর যে নীতি গ্রহণ করেছে, তার বাস্তবায়নের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী বা এনএসজির বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মন্তব্য করেছেন। উত্তর চব্বিশ পরগনার রাজারহাটে এনএসজির নতুন একটি আবাসিক কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। কোন শক্তি বা কোন মানুষ যাতে দেশভাগের চক্রান্ত করতে না পারে, দেশে অশান্তি তৈরি বা সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করতে না পারে তার জন্য এনএসজিকে আরো সক্রিয় হতে হবে বলে অমিত শাহ জানান।
বর্তমান কেন্দ্রের সরকারের সুস্পষ্ট ও ইতিবাচক বিদেশনীতি ও সুরক্ষানীতি গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করে অমিত শাহ বলেন, সুরক্ষার ক্ষেত্রে ভারতবর্ষের কাজ সারা বিশ্বের কাছে নজির। ভারতবর্ষ বিশ্বশান্তির পক্ষে, কিন্তু দেশের শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা হলে, তার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন। সারা বিশ্বে সন্ত্রাসবাদী দমন বাহিনী হিসেবে এনএসজি বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন,এনএসজির কর্মদক্ষতা বাড়াতে আধুনিক উন্নত অস্ত্রশস্ত্র ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পাশাপাশি, রণনীতি, প্রশিক্ষণের কৌশলেও বদল আনার উদ্যোগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নিচ্ছে বলে মন্ত্রী জানান। জওয়ানরা যাতে ন্যূনতম ১০০ দিন তার পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারে সেই উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন। এছাড়া হাউসিং স্যাটিসফ্যাকশন রেশিও উন্নত করার চেষ্টা হচ্ছে। এনএসজির কম্যান্ডদের সুরক্ষা, তাদের পরিবারের সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, বাড়ি, সন্তানদের লেখাপড়ার সম্পূর্ণ দায়িত্ব সরকারের বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেন।
এনএসজির মহানির্দেশক অনুপ কুমার বলেন, এনএসজি আজ পর্যন্ত ১১৫ টি অপারেশন করেছে। ৬০ এর বেশি সন্ত্রাসবাদীকে মারতে পেরেছে। অনুষ্ঠানে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে হায়দ্রাবাদের ২৮ নম্বর এনএসজি হাবে আয়ুধ ভান্ডার, ২৭ নম্বর ব্যাটালিয়ন চেন্নাইতে একটি কমপ্লেক্স ও ২৬ নম্বর ব্যাটালিয়নে একটি কোয়ার্টারেরও তিনি উদ্বোধন করেন। ২৯ নম্বর স্পেশাল কম্পোজিট গ্রূপে নির্মিত এই ৯ তল বিশিষ্ট এই আবাসিক কমপ্লেক্সটিতে ১০২ টি কোয়ার্টার রয়েছে। এটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ২৫ কোটি টাকা।
এদিকে, অনুষ্ঠানের শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এনএসজির তরফে মহরা প্রদর্শন করে দেখানো হয়।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিমানবন্দর থেকে সরাসরি রাজারহাটের NSG’র নয়া দপ্তরে পৌঁছন । নারকেল ফাটিয়ে, পুজো দিয়ে, ফিতে কেটে দপ্তরের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দেশের পূর্বাঞ্চলে জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার এটাই সদর দপ্তর। যেখান থেকে পূর্বাঞ্চলের সামগ্রিক নিরাপত্তা প্রদানের কাজ করতে পারবেন জওয়ানরা। এখানে থাকছে মোট ২৯ টি আবাসন। খরচ হয়েছে ২৪৫ কোটি টাকা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনেই এরপর জওয়ানরা মহড়া শুরু করে দেন।