করোনা নিয়ন্ত্রণে কী করণীয়? মমতাকে পারামর্শ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের

করোনা নিয়ন্ত্রণে কী করণীয়? মমতাকে পারামর্শ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের

কলকাতা:  রুটিনমাফিক সাংবাদিক বৈঠকে মঙ্গলবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড: অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে 'গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি বোর্ড ফর কোভিড রেসপন্স পলিসি ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল' তৈরি করা হয়েছে। অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে এই বোর্ডের নেতৃত্বে আছেন নোবেলজয়ী  অভিজিৎ বিনায়ক।

তবে বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময় অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা নয় বরং স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা হিসেবেই নিজের মতামত দিলেন অভিজিৎ বিনায়ক। করোনা নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের আগাম করনীয় কি কি হতে পারে সেই সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বললেন। পাশাপাশি রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁর পরামর্শ, আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হতে হবে। তবে রাজ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণে যে বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন তা হল টেস্টিং। করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো।  শুধু এরাজ্য নয় এইমূহুর্তে গোটা দেশেই যার অভাব রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে দেশী-বিদেশী স্বাস্থ বিশেষজ্ঞরাও এই টেস্টিং বাড়ানোর ওপরেই গুরুত্ব দিচ্ছে।

পদক্ষেপ হিসেবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের মতে করোনা আক্রান্তের হদিশ পেতে আরও বেশি করে পরীক্ষার জন্য মূলত রিপোর্টিং স্ট্রাকচার মজবুত করতে হবে। অর্থাৎ শহরের বাইরে গ্রামাঞ্চলগুলি থেকে সর্দিকাশির সমস্যা রয়েছে এমন মানুষদের খোঁজ করতে হবে এবং তার সরকারকে জানাতে হবে। তিনি বলেন আশাকর্মীদের এই কাজে নিযুক্ত করতে হবে। তাঁরা প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে এই তথ্য সংগ্রহ করবেন। মানুষ রাতে অযথা আতঙ্কিত না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। কোনো একটি এলাকায় একসঙ্গে অনেকের সর্দি-কাশির সমস্যা লক্ষ্য করলেই সেখানকার বাসিন্দাদের করোনা পরীক্ষা করতে হবে। তাঁরা ভয় পেলে বুঝিয়ে বলতে হবে যে কাশি মানেই করোনা নয়, অন্য কোনো সংক্রামণও হতে পারে। তাই পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াটা খুব দরকার।

অভিজিৎ বিনায়ক আরও বলেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা করা সম্ভব নয় তাই এলাকাভিত্তিক কেন্দ্র তৈরী করে এলাকার অসুস্থ বাসিন্দাদের তালিকা তৈরি করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী তাদের পর্যায়ক্রমে সেই কেন্দ্রে ঠেকে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট সরকারকে জানাতে হবে। এপ্রসঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই রোগের উপসর্গ যেহেতু খুব সাধারন তাই মানুষের মধ্যেও এবিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে । অনেকে আবার ডভয়ে পরীক্ষা করাতে চাইবেন না। কিন্তু দেখা যাবে হয়তো এর মধ্যে থেকেই দু-একজন করোনা আক্রান্ত। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, সব ক্ষেত্রেই  সংক্রমণ ধরা পড়বে এমন নয়। কিন্তু সাবধানতার খাতিরে এই টেস্টিং প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে।

এই সচেতনতা ও সর্তকতা প্রসঙ্গে এদিন কোরিয়া, তাইওয়ান এর মতো দেশেগুলির কথা উল্লেখ করেন তিনি। যেখানে শুধুমাত্র সতর্কতামূলক পদক্ষেপের মাধ্যমেই করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। সেখানকার সুপার মার্কেটগুলোতেও ভীষণ ভাবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বলেও উল্লেখ করেন অভিজিৎ বিনায়ক। সেই একই ব্যবস্থা এরাজ্যেও করা উচিত বলেই উল্লেখ করেছেন তিনি। ব্যবস্থা বলতে মার্কেটে ভোটার মুখে স্যনিটাইজ হয়ে নেওয়া। স্যানিটাইজার না থাকলে সাধারণ সাবান এবং জলের ব্যবস্থা করা। মার্কেটে মাস্ক পড়ে যাওয়া ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *