নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: গুরুং বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে শহিদ হওয়া রাজ্য পুলিশের এসআই অমিতাভ মালিকের মৃতদেহ বাড়িতে আসার পর তাঁর কফিনবন্দি দেহ আঁকড়ে ধরে সদ্যবিবাহিতা স্ত্রীর কান্নার দৃশ্যে অনেকের চোখের কোল ভিজে উঠেছিল। মন আর্দ্র হয়েছিল। অমিতাভর চাকরিটি পান তাঁর বিধবা স্ত্রী বিউটি।
কিন্তু সেই বিউটির বিরুদ্ধেই একরাশ ক্ষোভ উগরে দিল অমিতাভর পরিবার। অমিতাভর বাবার দাবি তাঁর ছেলের মৃত্যুর পর মাত্র তিনদিন তাঁদের বাড়িতে ছিলেন বিউটি। তারপর আর কোনও যোগাযোগই রাখেননি। খোঁজখবর নেননি, পালন করেননি কোনও দায়িত্ব। এমনকি সম্প্রতি বিউটির আরেকজন পুলিশকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কের আভাসও শোনা গেল অমিতাভর বাবার গলায়।
পুলিশদিবসে শহিদ অমিতাভ মালিকের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বারাসত ইয়ং জেনারেশনের সদস্যরা। এরপর অমিতাভর মা বাবার হাতে তুলে দেওয়া পোশাক ও মিষ্টি। ইয়ং জেনারেশনের সদস্য সোহম পাল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যে পুলিশদিবস পালন হচ্ছে।
পুলিশবিভাগ দিনটি নিজেদের মত করে পালন করেছে। অনেকেই অমিতাভ মালিকের কথা ভুলে গেছেন। তবে তাঁরা ভোলেননি বলে দাবি করেন। রাজ্যের জন্য জীবন দেওয়া পুলিশ কর্মীর পরিবারের পাশে দাঁড়াতেই এই উদ্যোগ বলেও জানান সোহমবাবু।
অমিতাভের মৃত্যুর পর রাজ্য সরকারের তরফে তাঁর পরিবারকে সহায়তা করা হয়। স্ত্রী বিউটি ছাড়াও চাকরি পেয়েছেন অমিতাভর ভাই। ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর দার্জিলিংয়ের জঙ্গলে গুরুং বাহিনীর ছোড়া একটি বুলেটে থেমে গিয়েছিল ২৬ বছরের সাহসী পুলিশ অফিসারের জীবন।
দার্জিলিংয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। তবে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বারবার ঠিকানা বদল করে আত্মগোপন করছিলেন গুরুং। এমতাবস্থায় গুরুংকে ধরতে তাঁর পাতলেবাসের ডেরায় উপস্থিত হন অমিতাভসহ পুলিশকর্মীরা। সেখানেই গুলির লড়াইয়ে প্রাণ যায় তাঁর। ২০১৪ সালে পুলিশের চাকরিতে য়োগ দেন অমিতাভ মালিক, ২০১৫ সাল থেকে দার্জিলিং সদর থানায় কর্মরত ছিলেন তিনি।