রামপুরহাট: রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের এক নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখের হত্যার ঘটনার পর বিরাট তোলপাড় হয়ে গ্রামে। পর পর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় যার ফলে মৃত্যু হয়েছে একাধিক। মৃতদের মধ্যে রয়েছে শিশু, মহিলা। এবার মনে করা হচ্ছে, মৃত্যু হয়েছে এক নব দম্পতির। বিয়ের মাস দুয়েক পর তারা বগটুই গ্রামে এসেছিলেন। আর সেটাই হয়তো কাল হয়েছে তাদের। অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর ‘নিখোঁজ’ তারা। তাদের আগুন পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন- গত দু’দশকে বাংলায় গণহত্যার বলি ৯১ জন, রামপুরহাট উস্কে দিল সেই ‘অন্ধকার’ স্মৃতি
বীরভূমেরই নানুরের বাসিন্দা কাজি সাজিদুল রহমান। তিনি তাঁর স্ত্রী মর্জিনা বিবিকে বগটুই থেকে আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন বলে দাবি কাজির বাবার। তাঁর কথায়, রামপুরহাট-কাণ্ডে নিহতদের মধ্যে তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূ রয়েছেন। তাদের ঘরে আগুন লাগানো হয়েছিল। জানা গিয়েছে, যেদিন রাতে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে সেদিন এক বন্ধুকে ফোনও করেছিলেন কাজি। তাদের ‘বাঁচাতে’ বলে পুলিশ ডাকতে বলেছিলেন। সেটাই ওই বন্ধুর সঙ্গে তাঁর শেষ কথা। এর পর থেকেই আর খোঁজ মিলছে না দু’জনের। তবে রামপুরহাট হাসপাতালে গিয়ে কাজির আত্মীয়রা তাদের ‘লাশ’ শনাক্ত করেছে বলে খবর। মাথার খুলি ছাড়া কিছু আর নেই বলে জানিয়েছে পরিবার। যদিও সেই দেহ আদৌ কাজির কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে বৈকি। কিন্তু কাজির বাবার দাবি, তাঁর ছেলে এবং ছেলের বউয়ের অগ্নিদগ্ধ হয়েই মৃত্যু হয়েছে।
সব মিলিয়ে বিরাট আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এই বগটুই গ্রামে। পরিস্থিতি এমন যে অনেক গ্রামবাসী গ্রাম ছাড়ছেন। এমনকি ঘর ছাড়ছেন ভাদু শেখের পরিবারের সদস্যও। আগের রাতের স্মৃতি ভিড় করে আসছে সকলের মধ্যে। তাই আশঙ্কা এবং আতঙ্ক দুইই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। সেই কারণেই এই গ্রামে আর থাকতে চাইছেন না কেউ। বাক্স গুছিয়ে বেরিয়ে যেতে চাইছেন যত জলদি সম্ভব। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন। তাই তাদের ওপরও বেশি ভরসা করতে পারছেন না কেউ।