কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ পাঁচ মাস মেট্রো পরিষেবা বন্ধ৷ অবশেষে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে কলকাতা মেট্রো রেল চালু হচ্ছে৷ বুধবার কলকাতা মেট্রো কতৃপক্ষ একটি নির্দেশিকা জারি করে যাত্রীদের জন্য গুচ্ছ বিধিনিষেধ চাপিয়েছে৷ কলকাতা মেট্রো রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মেট্রো পরিষেবা সোম থেকে শনি সকাল ৮ থেকে রাত ৮ পর্যন্ত মেট্রো পরিসেবা চালু থাকবে৷ রবিবার মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকবে। এছাড়া কনটেনমেন্ট জোনগুলিতে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকবে৷ অর্থাৎ, সেই সব এলাকায় মেট্রো স্টেশনের গেট খুলবে না৷ পাশাপাশি গুণচিহ্ন লাগানো অংশে যাত্রীদের বসতে পারবেন না৷
করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর মেট্রো কর্তৃপক্ষ৷ লোহার বাসর ঘরের ছিদ্র দিয়ে যাতে কালনাগিনী করোনা প্রবেশ করতে না পারে সেই জন্য বেশ কিছু নিয়ম জারি করছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।
স্টেশনে যে সব নিয়ম মানতে হবে: প্রতিটি স্টেশন জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে৷ যে সব স্থানে যাত্রীদের অবস্থান থাকে, সেসব জায়গা ঘন ঘন স্যানিটাইজ করাতে হবে৷ ওয়াশরুম, এসক্যালেটর, বুকিং কাউন্টার, দেওয়ালসহ যে সব জায়গায় যাত্রীদের বেশি হাত পড়ে, সেগুলি ঘনঘন স্যানিটাইজ করতে হবে৷ লিফট, এসক্যালেটর, সিঁড়ি বারবর স্যানিটাইজ করতে হবে৷ বুকিং কাউন্টার, প্ল্যাটফর্ম, এএফসি গেটে দাঁড়ানোর সময় যাত্রীদের মধ্যে ৬ ফিট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷ কোভিড সুরক্ষায় স্টেশনে সচেতনতামূলক বার্তা বারবার ঘোষণা করা হবে৷ কী করা যাবে আর কী যাবে না, তার ছোট ভিডিয়ো ক্লিপ স্টেশনের ডিসপ্লেতে দেখানো হবে৷ বেশি ভিড় হলে একাধিক প্রবেশ ও প্রস্তান গেট প্রস্তুত রাখা হবে৷ স্টেশন চত্বরে কোথাও যাতে ভিড় না হয় তার জন্য যৌথভাবে নজরদারি চালাবে আরপিএফ ও কলকাতা পুলিশ৷
কর্মীদের জন্য নিয়ম: বিরতিতে হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে৷ ঘন ঘন স্যানিটাইজ করতে হবে৷ ফেস মাস্ক ও গ্লাভস বাধ্যতামূলক। খালি হাতে কোনওভাবেই নাক, মুখ ছোঁয়া যাবে না৷ হাউজ কিপিং স্টাফদের শীঘ্রই টুপি ও অ্যাপ্রন দেওয়া হবে৷ বুকি কাউন্টারে সব সময় ছফিট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷ প্রত্যেক কর্মীর মোবাইলে আরোগ্য সেতু অ্যাপ থাকতে হবে৷
যাত্রীদের যা যা মানতে হবে: অ্যাপ থেকে ই-পাস নিতে হবে৷ ই-পাসের বৈধতা থাকবে এক ঘণ্টা৷ ই-পাসের ক্ষেত্রে ১২ ঘণ্টা আগে অ্যাডভান্স বুকিংয়ের সুবিধা থাকবে৷ মেট্রো রেলের কর্মীদের স্টেশন প্রবেশের ক্ষেত্রে ই-পাস লাগবে না৷ শুধুমাত্র যাত্রীদের ই-পাস লাগবে৷ মেট্রো রেলে ঠিকাদারের অধীনে কাজ করা কর্মীদের স্টেশনে প্রবেশের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা সার্টিফিকেট দেখাতে হবে৷ কোনও টোকেন গ্রাহ্য হবে না। স্মার্ট কার্ড ও ই-পাস ছাড়া কাউকে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হবে না৷ বুকিং কাউন্টারে স্মার্ট কার্ড রিচার্জ হবে৷ যাত্রীদের মোবাইলে আরোগ্য সেতু অ্যাপ থাকতে হবে৷ থার্মাল চেকিং হবে স্টেশনে ঢোকার মুখে৷ জ্বর, গলা ব্যথা, ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা থাকলে স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবেন না৷ মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক৷ সর্বাধিক তিনজন যাত্রী একই সময়ে লিফট ব্যবহার করতে পারবেন৷ স্টেশন চত্বরে থুতু বা পানের পিক ফেললে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে৷
ট্রেনে যে সব নিয়ম পালন করা হবে: ‘x’ লেখা সিটগুলিতে যাত্রীরা বসতে পারবেন না৷ কনটেনমেন্ট জোনে স্টেশন বন্ধ থাকবে৷ সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলবে ট্রেন৷ শেষ ট্রেন নির্ধারিত স্টেশন থেকে সন্ধ্যা সাতটায় রওনা দেবে৷ সব ট্রেন সব স্টেশনে দাঁড়াবে৷ আগে স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াত ২০ সেকেন্ড৷ এবার থেকে দাঁড়াবে ৩০ সেকেন্ড৷ প্রতিটি রেক স্যানিটাউজ হয়ে লাইনে ছুটবে৷