কলকাতা: একদিকে যখন টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা সার্টিফিকেট পাওয়ার ন্যায্য দাবি নিয়ে পথে নামার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেছ, ঠিক সেই পরিস্থিতিতে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি তাদের একাধিক দাবি নিয়ে নবান্ন অভিযানের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল সংবাদমাধ্যমকে। সেই অনুযায়ী অভিযান শুরু হয়েছিল। শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা যোগ দিয়েছিলেন মিছিলে। সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারের কাছে পুলিশ আটকে দেয় তাঁদের। সেখানেই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন তাঁরা। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির অন্য একটি প্রতিনিধি দল নবান্নে স্মারকলিপি প্রদান করেন। রাজ্যপালের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
পাস-ফেল প্রথা চালু করার আবেদন এর আগেও করেছে শিক্ষকমহল। প্রাথমিক স্তরে প্রথম শ্রেণি থেকে এই নিয়ম লাগু করার পক্ষেই সওয়াল করছে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। এছাড়া শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও অশিক্ষককর্মী নিয়োগ, বিদ্যালয়ে আধুনিকমানের পরিকাঠামো গঠন, এসএসকে এবং এমএসকে-গুলি যাতে বিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়, সেই দাবিও জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি মিডডে মিলের আগে খেলার ক্লাস না করে শেষ পিরিয়ডে ওই ক্লাস রাখার দাবিও জানিয়েছেন বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা। এই আবেদন বিদ্যালয় স্তরে শিক্ষার মানকে বাড়াবে বলেই মনে করছেন সংগঠনের কর্মীরা।
আনন্দ হাণ্ডার কথায়, 'সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা বাঁচাতেই আমরা এই পদক্ষেপ করছি।' একগুচ্ছ 'ন্যায্য' দাবিতে ৪ মার্চ দুপুর ১ টায় শ্রদ্ধানন্দ পার্ক থেকে শুরু করে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারের কাছেই বাধাপ্রাপ্ত হন শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাঁরা সেখানেই প্রতিবাদ সভা আয়োজন করেন সেখানেই। সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা, সতীশ সাউ, স্বপন চক্রবর্তী, কনককুমার সরদার, মোসাব্বর হোসেন, দীপঙ্কর মাইতি, ফরিদা ইয়াসমিন, সুমিতা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ৫ মার্চ এই একই দাবি নিয়ে তাঁরা রাজ্যপালের কাছে ডেপুটেশন দেবেন।
সরকারি প্রাথমিক শিক্ষার মান নিয়ে অভিযোগ তোলেন অনেকেই। সেই কারণে বেসরকারি স্কুলের দিকেই আমজনতার ঝোঁক বেড়েছে। এই অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য আধুনিক পরিকাঠামো যেমন দরকার, তেমনই প্রয়োজন পাস-ফেল নিয়ম চালু হওয়া। এমনটাই মনে করছে সংগঠন। তাছাড়া মিডডে মিলের আগে খেলার ক্লাস করলে পড়ুয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন বলেও মনে করছেন বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। সেক্ষেত্রে পড়ুয়াদের কিছু হলে তার দায় পড়বে শিক্ষকদের ওপর।