কলকাতা: করোনা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হাওড়া জেলাকে স্পর্শকাতর হিসেবে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি কলকাতাকেও একই তালিকায় রাখা হয়েছে। শুক্রবার নবান্নে রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “হাওড়ার পরিস্থিতি খুবই স্পর্শ কাতর। কলকাতাও রেগে জোনে। এই দুই জেলাকে রেড থেকে অরেঞ্জ জোনে আনতে হবে। হাওড়া ও কলকাতার কিছু এলাকায় সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে।”
মমতা জানান, এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের ৯৯ শতাংশই এই দুই জেলার। এখানকার মানুষকে লকডাউনের নিয়মবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার আবেদন জানিয়েছে তিনি। বাড়ি থেকে যতটা সম্ভব কম বেরোনোর আবেদন জানিয়েছেন জেলার বাসিন্দাদের। এলাকায় মাস্ক ছাড়া বাইরে বাইরে বেরোলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ থেকে বিশেষত হাওড়ার বাজারগুলিতে মানুষের গতিবিধির ওপর কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হল। এরজন্য সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে ৫ জনের বেশি বাজারে ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাজারে মাস্ক পরে যাওয়ার পাশাপাশি স্যোশাল ডিস্ট্যান্সিংয়ের নিয়ম বিধিও কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। হাওড়ার প্রত্যেকটি বাজার স্যানিটাইজ করবে পুলিশ।
এদিকে এর আগেই আজ হাওড়া পুরসভার সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, পুলিস কমিশনার। রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত হাওড়া জেলাকে আজ থেকে পুরোপুরি সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই বৈঠকে । এই জেলায় আরও বেশি নজরদারি বাড়াতে ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য কড়াকড়ি পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন। বস্তি এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়াতে সিভিক ভলেন্টিয়ারের সাহায্য নেওয়া হবে।
নবান্নে আজ মুখ্যমন্ত্রীর জানিয়েছেন করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের সীমানা দিয়ে কাউকে ঢুকতে দেওয়া যাবেনা। এক্ষেত্রে তিনি উল্লেখ করেন, শিলিগুড়িতে কঠোর নজরদারি দরকার কারণ সেখানে বাইরের লোক যাতায়াত করে। তিনি আরও জানিয়েছেন, মেদিনীপুর রেড থেকে অরেঞ্জ জোনে এসেছে। উঃ ২৪ পরগনাকেও অরেঞ্জ জোনে আনতে হবে। এ ছাড়া আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দুই দিনাজপুর, মালদহ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরলিয়া, পূর্ব বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম জেলার পরিস্থিতি তুলনামূলক ভাল। এই জেলাগুলোয় কোনও করোনা সংক্রমণ নেই। তাসত্ত্বেও এই জেলাগুলিতেও ডিএম-এসপি-দের পর্যাপ্ত নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২২জন। সবমিলিয়ে এপর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৬২। আরও ৪ জন সুস্থ হয়েছেন। সবমিলিয়ে করোনা আক্রান্ত ৫৫ জন সুস্থ হয়েছেন। করোনায় এপর্যন্ত রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের।