খেজুরি: নেতাজি হোক বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাঙালি মনীষীদের ছবি কিংবা মূর্তির উপরে রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের ছবির প্রাধান্যকে কেন্দ্র করে এর আগেও রাজ্য রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে একাধিক বিতর্ক। কখনো শাসকদলের তরফ থেকে আক্রমণ করা হয়েছে বিজেপিকে। কখনো আবার আক্রমণ শানিয়েছে গেরুয়া শিবিরও। বাংলায় ভোট পূর্ববর্তী উত্তাপের আবহে ফের একবার সামনে এল সেই বিতর্ক।
দু’দিন আগেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী পালনে দেশ জুড়ে সামিল হয়েছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তথা সাধারণ মানুষ। একই ভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকেও এক শহিদ বেদীতে নেতাজির ছবিতে মালা দিয়েছিলেন স্থানীয় বিজেপি সমর্থকরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এক বিশাল কাট আউটের পাশে পায়ের কাছে সুভাষচন্দ্র বসুর ছবি রাখার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এর ফলে দেশ নায়ক নেতাজিকে অসম্মান করা হয়েছে, এই মর্মে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনাও।
জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে। গত ২৩ জানুয়ারি খেজুরি-১ পূর্ব মণ্ডল কমিটির উদ্যোগে ধোবাপুকুরে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে নেতাজি জয়ন্তী পালন করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ছবির পায়ের কাছে রাখা নেতাজির সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় বিতর্ক। শুধু তাই নয়, শহিদ বেদীতে নেতাজির ছবি রাখায় বাঙালি ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে গেরুয়া সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
সূত্রের খবর, নেতাজি জয়ন্তীর দিন ধোবাপুকুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব জড়ো হয়ে সুভাষচন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা জানান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক তাপস দলাই, মণ্ডল সভাপতি সুমন দাস এবং অন্যান্যরা। বেদীতে নেতাজির ছবি রাখার পরেই তার উপর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। কিছুক্ষণ পর নেতাদের টনক নড়ে। তারপর তড়িঘড়ি উঁচুতে নেতাজির ছবি তুলে তাতে মালা পড়ানো হয়। এ প্রসঙ্গে তাপস দলাইয়ের মন্তব্য, ‘‘নেতাজি আমাদের আদর্শ। জাতীয় পতাকা তোলার সময় কেউ শহিদবেদির কাছে নেতাজির ছবি রেখে দিয়েছিল। পরে আমরা উঁচুতে রেখে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।বিজেপি কখনও মহান নেতার অবমাননা করে না।’’
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে অবশ্য এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও জোরদার হয়েছে বিতর্ক। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সতীশ সাউয়ের কথায়, ‘‘অন্তর থেকে শ্রদ্ধা জানাতে না পারলে এই ধরনের অনুষ্ঠান করার কী দরকার?’’