কলকাতা: দেশ ও রাজ্যজুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ৷ দীর্ঘ লকডাউনের আনলক-৪ পর্ব শুরু হলেও এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি পরিস্থিতি৷ ক্রমবর্ধমান করোনা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হল সর্বভারতীয় মেডিক্যালের প্রবেশিকা নিট পরীক্ষা৷ করোনা আবহে গণপরিবহণ ব্যবস্থা এখনও সচল না হওয়ায় মোটা টাকায় বাস-গাড়ি ভাড়া করে পরীক্ষাকেন্দ্রে ছুটতে বাধ্য হলেন পরীক্ষাদের একাংশ৷
আজ ছিল নিট পরীক্ষা৷ করোনা আবহের মধ্যেই শুরু হয়েছিল মেডিক্যালের সর্বভারতীয় প্রবেশিকা নিট৷ দুপুর দুটো থেকে শুরু হয় পরীক্ষা৷ পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছিল মেট্রো৷ অতিরিক্ত বাস চালিয়েছে রাজ্য সরকার৷ কিন্তু তার মধ্যেও চূড়ান্ত অপদস্ত হতে হল দূর-দূরান্ত থেকে আসা পরীক্ষার্থীদের৷ হাজার হাজার টাকা খরচ করে, গাড়ি ভাড়া নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছালেন পরীক্ষার্থীরা৷
বিহার থেকে বাংলায় এসে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছলেও সময়ের অভাবে পরীক্ষা দিতে পারলে না বিহারের এক পড়ুয়া৷ গতকাল সকালে রওনা দিয়েও যানজটের কারণে সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেননি সন্তোষ কুমার যাদব নামের ওই পরীক্ষার্থী৷ সল্টলেকে একটি কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট পর তিনি পৌঁছান৷ কিন্তু তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়৷ লাভ হয়নি পুলিশকে বলেও৷ রাজি হননি প্রিন্সিপাল৷ যেহেতু পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর কথা, ফলে ওই পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়৷
অন্যদিকে, মধ্য হাওড়ার দুটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য মালদা থেকে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া গুনে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছালেন বেশকিছু পরীক্ষার্থী৷ এদের মধ্যে কুমার ভারত একজন৷ তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, পরীক্ষাকেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে পৌঁছানোর জন্য তাঁরা একটি বাসের বন্দোবস্ত করেছিলেন৷ মালদহ থেকে বাস হাওড়া পর্যন্ত আসতে ভাড়া নিয়েছে ৪০ হাজার টাকা৷ এছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গ থেকে বিভিন্ন জেলার গাড়ি ভাড়া করে পরীক্ষা কেন্দ্রে এসেছেন পরীক্ষার্থীরা৷
এছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন বিভিন্ন পরীক্ষার্থীরা৷ কেউ এসেছেন বাইকে৷ কেউ আবার পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে গ্যাঁটে কড়ি গুনে গাড়ি ভাড়া করতে বাধ্য হয়েছেন৷ কসবার পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন মালদহেক এক পরীক্ষার্থী৷ তিনি ১০ হাজার টাকায় গাড়ি ভাড়া করেছেন৷ থাকা খাওয়া মিলিয়ে তাঁর খরচ পড়েছে ১২ হাজার টাকা৷ ১২ হাজার টাকা গুনেছেন একটি পরীক্ষার জন্য৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এমনই খণ্ড চিত্র দেখে স্তম্ভিত রাজ্যবাসী৷ উত্তরবঙ্গ থেকে শহর কলকাতায় আসতে যদি প্রার্থীদের ১০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া গুনতে হয়, তাহলে গোটা দেশের চিত্রটা কী? কল্পনা করতে পারছেন না অভিভাবকদের একাংশ৷