নারদ মামলা: দাঁত-মুখ চেপে মিথ্যা বলছে CBI, দাবি সিদ্ধর্থ লুথরার

নারদ মামলা: দাঁত-মুখ চেপে মিথ্যা বলছে CBI, দাবি সিদ্ধর্থ লুথরার

 

কলকাতা:  কলকাতা হাইকোর্টে চলছে হাইপ্রোফাইল নারদ মামলার শুনানি৷ নারদ মামলায় সওয়াল করছেন সিদ্ধার্থ লুথরা।

•  শুনানি আজকের মত শেষ। পরবর্তী শুনানি আগামী মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারো টা।

​​​​​​​• তারা কাজ করতে পারছেন না বলে সিবিআই মহামান্য বিচারপতিদের সামনে মনগড়া কথা বলেছেন। তাঁদের অভিযোগ মিথ্যা, এবং আমি এটা প্রমাণ করে দেবো। তখন সিবিআই এর ঘর ভেঙে যাবে- সিদ্ধার্থ লুথরা

• সিবিআই দাঁত মুখ চেপে মিথ্যা বলছে। সিসিটিভি ফুটেজ বলছে যে তাঁদের আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধা সৃষ্টি হয়নি ৷ বললেন, সিদ্ধার্থ লুথরা
 

•  আগে সিবিআই বলেছিল অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়ার দরকার নেই এবং তদন্তেরও  দরকার নেই। হঠাৎ করে ৭ মে সব শেষ হয়ে গেল!
তারপর হঠাৎ করেই এদের গ্রেফতার করা হল ? – সিদ্ধার্থ লুথরা

•  বিচারপতি হরিশ ট্যন্ডন বলেন, এই প্রশ্নগুলো জামিনের সঙ্গে সংযুক্ত । আমরা জামিনের সূক্ষ্মতা বিচার করছি না। তুষার মেহতা বলেছেন যে একটা বাধার  সৃষ্টি করা হয়েছিল যেটাকে তিনি মানুষের জমায়েত বা বিক্ষোভ বলে অভিহিত করেছেন । 
 

• সিবিআই এর বক্তব্য যে তারা বিক্ষোভের কারণে চার অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে নিতে পারেনি। আমার বক্তব্য হচ্ছে যে সিবিআই তাঁদের হেফাজতে পায়নি তার কারণ গ্রেফতারিটা ছিল অতিরঞ্জিত, আইন এটার অনুমতি দেয়না। – সিদ্ধার্থ লুথরা

•  গ্রেফতারির বৈধতা কি এই মামলার ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক ? সিবিআই এর বক্তব্য হল যে তারা বিক্ষোভের কারণে অভিযুক্তদের আদালতের সামনে পেশ করতে পারেনি।  -সিদ্ধার্থ লুথরাকে প্রশ্ন বিচারপতি সৌমেন সেনের।

•  ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্যে সিবিআই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সাহায্য চাইতে পারত। কিন্তু তারা যেভাবে গ্রেফতার করেছে তারপর আর সাহায্যও চাইতে পারেনি৷ বললেন সিদ্ধার্থ লুথরা

• কোভিড প্রোটোকল না মেনেই মদন মিত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ ২০ টিরও বেশি গাড়ি নিয়ে সিবিআই এল, পরোয়ানা ছাড়াই একজন ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেলো এবং তারপর আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ দিল। এবং তারপরও তারা বলছেন যে সিবিআই অফিসের বাইরে লোকের জমায়েত ছিল ?  প্রশ্ন সিদ্ধার্থ লুথরার

• সেটা হলে কি বিক্ষোভের অধিকার অর্জন করা যায় ? সিদ্ধার্থ লুথরাকে পাল্টা প্রশ্ন বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের৷

•  অ্যারেস্ট মেমো অনুযায়ী তাদের নিজাম প্যালেস থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  হলফনামা থেকে দেখা যাচ্ছে তাঁদের সকালে গ্রেফতার করা হয়েছে।   তাহলে অ্যারেস্ট মেমো কি পরে যুক্ত করা হয়েছে ? – সিদ্ধার্থ লুথরা

•  বাইরে যদি প্রচণ্ড গন্ডগোলও চলে তাহলেও মাননীয় বিচারপতিদের কাজে কে বাঁধাদান করবে ?- সিদ্ধার্থ লুথরা

•  সিবিআই ৮:১০ এ গ্রেফতার করেছে , কিন্তু অ্যারেস্ট মেমোতে ৮:৪৫ দেখিয়েছে। এটা কি সিবিআই এর গ্রেফতারির সংজ্ঞা?  জনপ্রতিনিধিদের গ্রেফতার করার আগে অনুমতি নিতে হয়, এখানে গ্রেফতারের পরে নেওয়া হয়েছে। সিবিআই এর আধিকারিকরা দুপুর ১ টার সময় রাজ্যপালের অফিসের বাইরে বসেছিলেন।  -সিদ্ধার্থ লুথরা

•  বিচারক বা বিচারপতিরা শপথ মেনে চলেন, কিন্তু তাঁরাও মানুষ, কম্পিউটার বা রোবট নন। তাঁরাও নির্ভুল নন।  বললেন, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়৷

•   মামলায় একজন জিতবে একজন হারবে। আদালতের নিয়ম অনুযায়ী রায় পছন্দ না হলে উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়। একটা রায় আপনার বিরুদ্ধে গিয়েছে বলে সেটাই মামলা স্থানান্তরের কোনও কারণ হতে পারে না। – সিদ্ধার্থ লুথরা

•    জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের সমতুল্য ক্ষমতা নিম্ন আদালতের আছে। – সিদ্ধার্থ লুথরা।
•    সিদ্ধার্থ লুথরা বলেন, আমার বিশ্বাস যে মাননীয় বিচারপতিরা জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দিতেন না। ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে তারা জামিন স্থগিত করেছেন। সিবিআই অত্যন্ত সৃজনশীল ভাবে তাদের বক্তব্য পেশ করেছেন।

•  যে শপথের মর্যাদা রক্ষার কথা আমরা সবসময় বলি, বিশেষ বিচারক কি সেটা রক্ষা করবেন না ?  সিদ্ধার্থ লুথরা

•   না, আমি বলতে চাইছি যে নিম্ন আদালতের বিচারকরা শপথের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নির্ভয়ে রায়দান করেন। – সিদ্ধার্থ লুথরা

•  এই বক্তব্যের মনে কি ? আপনি কি বলতে চাইছেন যে বিচারপতিরা তাদের গ্রহণ করা শপথ মেনে চলেন না ? সিদ্ধার্থ লুথরাকে প্রশ্ন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ  বিন্দলের।

 •    বিচারপতিরা সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করার শপথ নেন৷ তাঁরা মানুষের ধারণার দ্বারা প্রভাবিত হন না। আমরা যদি সলিসিটর জেনারেলের বক্তব্য স্বীকার করে নিই , তাহলে আমরা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ব। তাহলে আমাদের বলা হবে যে মাননীয় বিচারপতিরা যে শপথবাক্য পাঠ করেছেন সেটা একটা কাগজ ছাড়া কিছু নয়। বললেন লুথরা৷  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী-আইনমন্ত্রীর হয়ে হলফনামা দাখিলের আবেদন খারিজ হাইকোর্টে

নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী-আইনমন্ত্রীর হয়ে হলফনামা দাখিলের আবেদন খারিজ হাইকোর্টে

high-court-ssc-case-hearing-commission-faces-question

কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টে শুরু নারদ মামলার শুনানি৷ নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর হয়ে হলফনামা দাখিলের আবেদন জানান আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী৷ এতে আপত্তি জানান সিবিআই পক্ষের আইনজীবী সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা৷ 

আরও পড়ুন- শুভেন্দুর উপস্থিতিতে দিল্লিতে ৩ সাংসদ! কেন? অন্য সমীকরণ দেখছে রাজনৈতিক মহল

আজ সকালে ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ শুনানি প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ শুরুতেই তুষার মেহতা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর হয়ে বর্ষীয়ান আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী হলফনামা দিতে চাইছেন, এতে আমাদের আপত্তি রয়েছে৷ এর পরেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাকেশ বিন্দাল বলেন, এক পক্ষের সওয়াল হয়ে গিয়েছে৷ তাই এই হলফনামা আমরা গ্রহণ করছি না৷ এর পরেই দ্বিবেদীর প্রশ্ন, ২ জুন অতিরিক্ত হলফনামা দাখিল করা হয়েছে৷ আমরা কেন করতে পারব না? অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং আইনজীবী তুষার মেহতা রিল্পাই করেন৷ কিশোর দত্ত বলেন, আইনমাফিক হলফনামার জন্য চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়৷ 

পরবর্তী ক্ষেত্রে ভারতপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের পর্যবেক্ষণ, আমরা এক সপ্তাহ ধরে নারদ মামলা শুনছি৷ আপনি কি চান আমরা আবার এই বিষয়টা শুনি৷ আপনি আদালতের সঙ্গে এটা করতে পারেন না৷ আমরা বক্তব্য পেশের সময় বলেছিলাম প্রতিবাদী নেতাদের পার্টি করা হয়েছে৷ কিন্তু তখন কেউ হলফনামা পেশ করেনি৷  

অপর এক বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, যখন আপনাদের এই মামলায় পার্টি করা হয়েছে তখনই হলফনামা জমা দেওয়ার অনুমতি চাইতে পারতেন৷ এখন কেন অনুমতি চাইছেন? আমরা এই হলফনামা গ্রহণ করতে পারছি না৷  
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নারদ মামলায় হলফনামা পেশ কল্যাণের, আগে জামিনের শুনানি চাইছে হাইকোর্ট

নারদ মামলায় হলফনামা পেশ কল্যাণের, আগে জামিনের শুনানি চাইছে হাইকোর্ট

কলকাতা:  নারদ মামলায় বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই হলফনামা৷ 

আরও পড়ুন- শর্তসাপেক্ষে খুলছে হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাড়ল দোকান খোলার সময়

প্রসঙ্গত, নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পার্টি করেছিল সিবিআই৷ এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজ কলকাতা হাইকোর্টে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় হলফনামা পেশ করেন৷ সেখানে তিনি বলেন, ১৭ মে চার হেভিওয়েট নেতামন্ত্রীকে গ্রেফতারের পর তাঁর ভূমিকা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সবটাই ভুয়ো৷ যে সময়ের কথা সিবিআই বলছে, তাতেও গড়মিল রয়েছে৷ পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের ভূমিকা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন৷ কল্যাণবাবু বলেন, জনস্বার্থ মামলা ছাড়া নারদের মতো মামলা কী ভাবে প্রধান বিচারপতির কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হল৷  কেন সিবিআই সিঙ্গেল বেঞ্চের বদলে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করল, এই সকল বিষয় হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে৷ 

পাশাপাশি এদিন নারদ মামলায় সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতার বক্তব্যের মাঝেই নিজের বক্তব্য পেশ করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তুষার মেহতাকে উদ্দেশ্য করে মজার ছলে বিচারপতি সৌমেন সেন বলেন, আম্পায়ার যতই চেষ্টা করুক না কেন ব্যাটসম্যানের কাছে থাকা ফিল্ডার মন্তব্য করবেই। মজার ছলেই তুষার মেহতা বলেন, হ্যাঁ, স্লেজিং চলতে থাকে। 

•    বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় তুষার মেহতাকে বলেন, বৃহত্তর বেঞ্চ যদি নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করতে পারে তাহলে কি জামিনের আবেদনও মঞ্জুর করতে পারে? 
•    হাইকোর্ট মনে করলে যেমন মামলা স্থানান্তরের নির্দেশ দিতে পারে, তেমনই জামিনের আবেদনও স্থানান্তরের নির্দেশও দিতে পারেন। 
•    জামিনের আবেদন হাইকোর্টে স্থানান্তর করার ক্ষেত্রে কোনও আইনি বাধা নেই। জামিনের মামলা হাইকোর্টে শুনানি করে তারপর চূড়ান্ত নির্দেশ দিতে পারে উচ্চ আদালত৷ উত্তর তুষার মেহতার৷
•    আগে জামিনের শুনানি হলে মামলার বাকি অংশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে৷ বললেন সলিসিটার জেনারেল৷
•    ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, আমরা চাই আগে জামিনের আবেদনের শুনানি শুরু হোক৷ 
•    অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, সমস্ত দিক থেকেই এটা একটা অভূতপূর্ব মামলা৷ সমস্ত বিষয় ছেড়ে সিবিআই শুধুমাত্র মানুষের ভিড় নিয়েই চিন্তিত। 
•     সিঙ্ঘভি বলেন, সিবিআই কখনই গোটা ঘটনার বিশদ বিবরণে যেতে চাইছে না। তাহলে তারা অসুবিধার মধ্যে পড়বে৷ 
•    কী ভাবে বিচারক বাধাপ্রাপ্ত হলেন, কী ভাবে বিচারব্যবস্থা বাধাপ্রাপ্ত হল, কী ভাবে বিচারক  পক্ষপাতদুষ্ট হল, কী ভাবে মানুষের ভিড় এর জন্য দায়ী হল, তার কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সিবিআই এর কাছে নেই। বললেন সিঙ্ঘভি৷ –এর পরেই শেষ হয়ে যায় শুনানি৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *