‘রাজ্য সরকারের বক্তব্য শুনতে অসুবিধে কোথায়?’ বিচারপতির সৌমেন সেনের প্রশ্নের মুখে CBI

‘রাজ্য সরকারের বক্তব্য শুনতে অসুবিধে কোথায়?’ বিচারপতির সৌমেন সেনের প্রশ্নের মুখে CBI

কলকাতা: নারদ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে তাঁরা এই  হলফনামা জমা দেন৷  মঙ্গলবার হল মামলার শুনানি । প্রসঙ্গত, নারদ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্তু তাঁকে পুনরায় কলকাতা হাই কোর্টেই আবেদন করার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত৷ তার প্রেক্ষিতেই কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ আজকের মতো মুলতুবি হয়েছে শুনানি৷ 

আরও পড়ুন- কয়লাকাণ্ডে ED হানা, অনুপ মাঝি ও গণেশ বাগাড়িয়ার বাড়িতে তল্লাশি

•    কেন্দ্রীয় সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহেতাকে বিচারপতি সৌমেন সেনের প্রশ্ন, রাজ্য সরকারের বক্তব্য শুনতে অসুবিধে কোথায়? তারা তাদের হলফনামা জমা দেওয়ার পর যদি আপনাদের কিছু বক্তব্য থাকে তাহলে সেটাও আমরা শুনবো৷ 
•    আমদের বক্তব্য সব শুনে তারা হলফনামা জমা দিয়ে রাজ্যের বক্তব্য রাখতে চাইছেন যার তীব্র বিরোধিতা করছি।
•    রাজ্যের অতিরিক্ত হলফনামা জমা দেওয়ার তীব্র আপত্তি জানালেন সিবিআই পক্ষের আইনজীবী সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহেতা। তাঁর দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তাহলে কেন রাজ্য সরকার এত দেরিতে হলফনামা জমা দেওয়ার কথা বলছে?
•    
•    মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, ঘটনার দিন তিনি নিজাম প্যালেসে উপস্থিত ছিলেন এ কথা সত্যি কিন্তু তিনি কোনও মন্তব্য বা বক্তব্য রাখেননি। সিবিআই তাদের অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ দেখাল না কেন?
•    সিবিআই প্রমাণ করতে চাইছে, এরাজ্যে তদের সহকর্মীরা সুরক্ষিত নয়। এই বিষয়টা প্রমাণ করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। সিবিআই হলফনামায় যে অভিযোগ করেছে সেই অভিযোগের কোনও সিসিটিভি ফুটেজ আদলতের কাছে জমা দেয়নি কেন? তারা মৌখিক অভিযোগ করেছেন কিন্তু তাঁদের কাছে কোনও প্রমাণ নেই।

•    গত ১৭মে রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক সিবিআই বিশেষ আদালতে প্রভাব খাটাতে গিয়েছিলেন বলে সিবিআই যে তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করথে তা ভুল।
•    
•      কিশোর  দত্তে বলেন, গত ১৭  মে সিবিআই নারদ মামলায় ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করায় পর নিজাম প্যালেসে প্রচুর পরিমাণে কলকাতা পুলিশ মোতায়েন ছিলেন। কিন্তু সিবিআই তদের হলফনামায় উল্লেখ করেছে, সেদিন সিবিআই দফতরের পুলিশি নিরাপত্তা ছিল না৷ এই অভিযোগ সঠিক নয়। কারণ পুলিশ সারা দিন তাঁদের সহযোগিতা করেছিলেন৷ 
•    
•    ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, সকলের জন্য আইন এক, কারোর জন্য আলাদ আইন নেই। সকলের উদ্দেশ্যেই নির্দেশ ছিল হলফনামা জমা দেওয়ার। তাহলে আপনি (AG) হলফ নামা সঠিক সময়ে না দিলে দায় কি আদলতের?

•  ৯ই জুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার পর  ২৫শে জুন কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে  হলফনামা জমা নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই মোতাবেক আমরা দু’জনের হলফনামা জমা দিলাম। এই হলফনামা রেকর্ড করার আবেদন জানাচ্ছি৷ 
• মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন অ্যাডভোটেক জেনারেল কিশোর দত্ত৷
 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

‘BJP-র সদস্য’! বিচারপতির উপর ‘অনাস্থা’ এনে এজলাস বদলে জোর সওয়াল!

‘BJP-র সদস্য’! বিচারপতির উপর ‘অনাস্থা’ এনে এজলাস বদলে জোর সওয়াল!

কলকাতা: নন্দীগ্রামে ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ওই মামলার শুনানি বিচারপতি কৌশিল চন্দের এজলাসে পাঠিয়ে দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল৷ কিন্তু কৌশিল চন্দের এজলাস থেকে মামলা অন্যত্র সরানোর আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি৷ এদিন ভার্চুয়ালি এজসাসে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও৷ 

আরও পড়ুন- ‘BJP-র আইনি সেলের প্রধান, তাদের হয়ে একাধিক মামলা’, এজলাস বদলের যুক্তি মমতার আইনজীবীর!

এদিন সওয়াল জবাব শুরু হতেই বিচারপতি কৌশিক চন্দের উপর অনাস্থা প্রকাশ করেন সিঙ্ঘভি৷ তিনি যাতে স্বেচ্ছায় এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান, সেই আর্জিও জানান৷ নন্দীগ্রাম মামলাটি বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে পাঠানোর পরেই তুমুল আপত্তি জানায় তৃণমূল৷ এদিন কৌশিক চন্দ বলেন, ১৮ই জুন মামলাটি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল আমার কাছে পাঠিয়েছেন। সারা পৃথিবীতেই এমনি হয় বিচার ব্যবস্থায়৷ তাহলে এমন কী ঘটলো যে মামলার শুনানি সম্পূর্ন না করেই আপনাদের মনে হলো আপনারা সুবিচার পাবেন না৷ 

এর জবাবে  অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন,  দুটি বিষয় নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে৷ প্রথমত, আপনি এখনও স্থায়ী বিচারপতি হননি। দ্বিতীয়ত, আপনি আইনজীবি থাকাকালীন ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে আদালতে অনেক মামলা লড়েছেন৷ তাই আমরা চাইছি অন্য বেঞ্চে মামলা শুনানি করা হোক৷  তিনি আরও বলেন, আপনি আইনজীবী থাকাকালীন  বিজেপির হয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলা করেছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম ইমাম ভাতা, বিজেপির রথযাত্রা৷ কলকাতায় RSS  অনুষ্ঠান করতে না দেওয়ায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও মামলা করেছিলেন।  আপনি বিজেপি’র আইনি সেলের প্রধানও ছিলেন৷  সে কারণেই মামলার রায় পক্ষপাত দুষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আমার মক্কেল৷ 

আরও পড়ুন- কলকাতা পুরসভায় চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে পরীক্ষাও নিয়েছিল ভুয়ো IAS দেবাঞ্জন!

এদিকে, শুনানি স্থগিত হওয়ার পর সিঙ্ঘভি বলেন, আমরা আশা করব উনি এই মামলা থেকে সরে দাঁড়াবেন৷ আমাদের দেশে একটি কোড অফ কনডাক্ট তৈরি হয়েছিল পাঁচ বিচারপতির নেতৃত্বে৷ যাঁর প্রধান ছিলেন এএস আনন্দ৷ তাঁরা যে ১৬টি পয়েন্ট করেছিল তাঁর প্রথম পয়েন্টে বলা হয়েছিল, যদি সাধারণ মানুষের মনে বিচারপতি নিরপেক্ষ নন, উনি একপেশে, তাহলে ওঁনার উচিত মামলা থেকে সরে দাঁড়ানো৷ তাছাড়া বিচারপতি চন্দ বিজেপি’র সদস্য ছিলেন৷ উনি বিজেপি’র হয়ে প্রচুর মামলা করেছেন৷ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *