বারাসত: বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে ঘটল বিস্ফোরণ৷ নৈহাটির গঙ্গার পাড়ে বিস্ফোরণের অভিঘাতে কেঁপে উঠল চুঁচুড়া৷ নৈহাটিতে বাজেয়াপ্ত বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে৷ নৈহাটিতে গঙ্গার পাড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় কেঁপে ওঠে চুঁচুড়া পুরসভা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা৷ গুরুতর ভাবে জখম হয়েছেন দুই পুলিশ কর্মী৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ স্থানীয়দের আশ্বাস দিয়ে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর৷
আজ বিকালে যাত্রা উৎসবে উদ্বোধন মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যাত্রা উৎসবে আসার সময় আমার কাছে একটি খবর এল, নৈহাটিতে বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে, করছিল জলের মধ্যে৷ সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে গিয়েছে৷ তার জন্য বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে৷ আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি এই মিটিংয়ের মাধ্যমে৷ পার্থ ভৌমিককে আমি এলাকায় পাঠিয়েছি৷ এলাকার এমএলএ৷ কারও যদি সত্যি ক্ষতি হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আমি জেলাশাসককে বলে দিয়ে যাচ্ছি, গোটা বিষয়টি দেখে রিপোর্ট দিতে৷ আমরা প্রয়োজনীয় সাহায্য নিশ্চয়ই দেব৷ চিন্তা করবেন না৷ একটা কাজ করতে গিয়ে দুটো একটা ক্ষতি হয়ে থাকে৷ সেটা তো আমাদের নিশ্চয়ই দেখার দায়িত্ব৷ এটা আমরা দেখব৷ এটা আপনি নিশ্চিন্তে থাকবেন৷’’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি আপনাদের আবার বলছি, নৈহাটিতে কারও যদি সত্যিই ক্ষতি হয়ে থাকে এটা রিভিউ হবে কাল থেকে৷ আমরা আমাদের যে ক্ষতিপূরণ পলিসি আছে সেই অনুযায়ী, কার কতটা ক্ষতি হয়েছে সেটা দেখে আমরা প্রয়োজনীয় সাহায্য নেব৷ চিন্তা করবেন না৷ দাঙ্গায় একটা মানুষের ঘরবাড়ি পুড়লেও সেটাও আমরা ক্ষতিপূরণ দিই৷’’
অন্যদিকে, সাংবাদিক বৈঠক করে মোহাম্মদ সেলিমের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় পুলিশকে বলে দিয়েছেন বোমা ও বাজি দু’টিকে এক করে দেখতে৷ আজ পুলিশের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে এত বড় বিস্ফোরণ ঘটে গেল৷ বেআইনি বাজি-বোমা তৈরির কারখানা বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি৷ কারণ এর পেছনে তৃণমূলের নেতারা জড়িত৷ আজ এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করল, তৃণমূল ও পুলিশের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা৷
ভেঙে গিয়েছে বাড়ির জানালার কাঁচ৷ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চুঁচুড়া পুরভবন -সহ বেশ কয়েকটি বাড়ি৷ প্রতিবাদে পথ অবরোধ চঁচুড়ার গঙ্গার পাড়ের বাসিন্দাদের৷ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ বিরুদ্ধে চড়াও নৈহাটির বাসিন্দাদের৷ পুলিশের দু’টি গাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা৷ বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল নৈহাটি ও চুঁচুড়ার বেশিরভাগ এলাকা কেঁপে ওঠে৷ ছড়িয়ে পড়ে তীব্র আতঙ্ক৷ এমন কী বিস্ফোরক ছিল, যাতে কেঁপে উঠল গঙ্গার দুই পাড়? বাজি না আইইডি? নাকি পরমাণু বোমা? প্রশ্ন তুলছে জনতা৷
বাজি নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছিল গত তিন চারদিন ধরে৷ এরকম দাবি গঙ্গার দু’পারের বাসিন্দাদের৷ গত ৩ জানুয়ারি নৈহাটি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে৷ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল চার জনের৷ এই ঘটনার পর পুলিশ তল্লাশি শুরু করে৷ অভিযানে নেমে নৈহাটির রামঘাট ও চারঘাট এলাকা থেকে বাজেয়াপ্ত হয় বিপুল বিস্ফোরক৷ বাজি নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে আজ বিস্ফোরণ ঘটে৷ নৈহাটির রামঘাটের গঙ্গার পাড়ে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে নৈহাটি ও চুঁচুড়া৷ চুঁচুড়া বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন চন্দননগরের সিপি৷ শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত৷