কলকাতা: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড় ডায়মন্ডহারবারে যাওয়ার পথে এদিন হামলা চালানো হয় জেপি নাড্ডার কনভয়ে৷ তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে চলে ইঁট বৃষ্টি৷ এই ঘটনার জন্য তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি৷ পাল্টা জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ছোট ঘটনা৷ সবটাই পরিকল্পিত৷
আরও পড়ুন- বেকারত্ব সরিয়ে রাজ্যজুড়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ, ভোটের মুখে ঘোষণা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে কে দেখছিল? কনভয়ের টেইল কারে হয়তো একটা ছোট ইঁট এসে পড়ছে সেটা কে দেখল বন্ধু? ছবিটা কী করে তোলা হল? ভিডিয়োটাই বা কী করে তৈরি হল? মনে হচ্ছে স্যাটেলাইট থেকে সব কাজ হচ্ছে৷’’ তোপ দেগে বলেন, ‘‘যাঁদের খুঁটির জোড় নেই, তাঁদের পিছনে চারটে করে সিকিইরিটি বড় বড় বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে৷ তোমাদের সিআইএসএফ, বিএসএফ, সিআরপিএফ, কমান্ডো আছে৷ এত ফোর্স থাকার পরও কউ কী ভাবে গাড়িতে হাত দিতে পারে?’’
তাঁর সাফ কথা, আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ে নাক গলানোর অধিকার কারও নেই৷ একেকটা গুণ্ডাকে চারটে ছ’টা নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে রাখা হয়েছে৷ অথচ রাজ্য সরকারকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করে না৷ সমস্যায় পড়লেই রাজ্যকে গালমন্দ করা হয়৷ পার্টির ক্যাডাররা লাঠি-বন্দুক, ছরার নিয়ে রাস্তায় নামে, আর দোষ দেওয়া হয় রাজ্যকে৷ তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের উপর নির্ভর করলে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ার অধিকার রয়েছে আমাদের৷ এবং তা দেওয়াও হয়৷ বিরোধী বা সরকার বলে আমরা ভেদ করি না৷ তৃণমূলের থেকে বিরোধীদের আমরা অনেক বেশি সম্মান দিই৷ অথচ আমি দিল্লি গেলেই বিজেপি’র লোকজন আমার বাড়ি ঘেরাও করে৷ সম্মান পেতে গেলে সম্মান দিতে হয়৷’’ আজ শিরাকলো কিছু হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি৷
আরও পড়ুন- ‘সব কাজ আমার করে দেওয়া আছে, বিজেপি শুধু ঘেউ ঘেউ করছে’, হুঙ্কার মমতার
এদিন রাজ্য পুলিশের তরফেও বলা হয়, বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সুস্থ ভাবেই ডায়মন্ডহারবারের সভায় পৌঁছেছেন৷ তাঁর কনভয়ে কোনও হামলা হয়নি৷ দেবিপুরে কয়েকজন পথচারী বিক্ষিপ্তভাবে পাথর ছুড়েছিল৷ সকলেই নিরাপদে রয়েছে৷ পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রয়েছে৷ এদিন আসলে কী ঘটেছিল তা তদন্ত করে দেখা হবে৷ অন্যদিকে এদিনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়৷ তিনি বলেন, অরজকতা এবং নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে৷ পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক৷ রাজ্য পুলিশের মদতে শাসক তৃণমূলের হার্মাদরা বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতির কনভয়ে হামলা চালিয়েছে৷ এই ঘটনার নিন্দা জানাই৷ ই ঘটনার নিন্দা করছেন অমিত শাহ৷ তিনি বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতির উপর হামলার ঘটনা নিন্দা জনক৷ এই ঘটনার যতই নিন্দা করা যাক, তা কম৷
তৃণমূলের তরফেও এই ঘটনার বিবৃতি দেওয়া হয়েছে৷ সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, নাড্ডার কনভয় যাওয়ার সময় নানা রকম ভিডিয়ো করে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা চলছিল৷ ডায়মন্ডহারবারে যে ঘটনা ঘটেছে তা পরিকল্পনা মাফিক ঘটানো হয়েছে৷ উনি অনেক ভুল কথা বলছেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে গিয়ে মানুষকে প্ররোচনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন৷ পরিকল্পিত ভাবে পাবলিসিটি নেওয়ার জন্যই এটা করা হচ্ছে৷ রাজনীতির নামে শান্তিপ্রিয় বঙ্গে অশান্তি তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ তৃণমূলের নামে মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে৷ নাড্ডার এই উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্যের নিন্দা করছি৷ এই ঘটনায় তৃণমূলের কেউ যুক্ত থাকলে তাঁকেও শাস্তি দেওয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন৷ অন্যদিকে, রাজ্য পুলিশের দাবি ডায়মন্ডহারবারে নাড্ডার কনভয়ে কোনও হামলাই ঘটেনি৷