কলকাতা: বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে বিশদে আলোচনা করতে দিল্লিতে তলব করা হয়েছে মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিজি-কে৷ কেন্দ্রের এই আচরণে অসন্তুষ্ট তৃণমূল৷ শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন দুই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌগত রায়৷ নাড্ডার কনভয়ে হামলার জন্য বিজেপি’কেই দুষলেন তাঁরা৷ আইন ভাঙার অভিযোগ তুললেন বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতির বিরুদ্ধে৷
আরও পড়ুন- চায়ের দোকানের আড়ালে জঙ্গি কার্যকলাপ? জালে সন্দেহভাজন জামাত জঙ্গি
এদিন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল৷ আইন শৃঙ্খলা নিয়ে কোনও প্রশ্ন করা হলে রাজ্য সরকার বিধানসভায় তার জবাব দেবে৷ অন্য কাউকে এই বিষয়ে জবাব দিতে বাধ্য নয়৷ অন্যদিকে, জেড ক্যাটাগরির ছাড়াও অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল জেপি নাড্ডাকে৷ বুলেটপ্রুফ গাড়ি ও তাঁর কনভয়ের সঙ্গে ছিল পুলিশের পাইলট৷ রাজ্য পুলিশের এসকর্ট ছাড়াও ছিল সিআরপিএফ জওয়ানরা৷ তাঁর কথায়, জেড ক্যাটাগরির কোনও ব্যক্তি স্কট নিয়ে গেলে তার আগে বা পিছনে কেউ থাকতে পারেন না৷ এই নিয়ম প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য৷ কিন্তু গতকাল নাড্ডার কনভয়ের আগে প্রায় ৫০টিরও বেশি মোটরবাইক ছিল৷ পিছনেও ছিল বাইকের মিছিল৷
কল্যাণবাবু বলেন, নাড্ডার কনভয় যাওয়ার সময় রাকেশ সিং তৃণমূল মঞ্চের সামনে তৃণমূল কর্মীদের দেখে অঙ্গভঙ্গী করতে থাকেন৷ যা খুবই অশালীন৷ তিনিই আসল অপরাধী৷ এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে ৫৯টি মামলা ঝুলে রয়েছে৷ রয়েছেন ফৌজদারি মামলাও৷ কেন একজন অপরাধীকে নাড্ডা নিজের সঙ্গে নিয়ে গেলেন? কেন কনভয়ের সঙ্গে এতগুলো গাড়ি গেল? প্রশ্ন তোলেন তিনি৷ নাড্ডা নিজেই আইন ভেঙেছে বলেও অভিযোগ তোলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷
তিনি বলেন, কোনও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই এইভাবে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং ডিএসপিই-কে তলব করতে পারে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক৷ কোন আইনে তাঁদের ডাকা হল, কেন্দ্রকে তাঁর জাবাব দিতে হবেও তিনি সুর চড়ান৷ কেন্দ্রীয় সরকার আইন বহির্ভূত কাজ করছে বলেও তোপ দাগেন তিনি৷ কল্যাণবাবু বলেন, অসাংবিধানিক কাজের জন্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করছি৷
আরও পড়ুন- ‘গণতন্ত্রণের লজ্জা! আগুন নিয়ে খেলবেন না’, মমতাকে হুঁশিয়ারি রাজ্যপালের
গতকালের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ৷ এদিনের হামলার ঘটনা ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ একটি মামলা হয়েছে বিজেপি নেতা রাকেশ সিং-এর বিরুদ্ধে৷ দ্বিতীয় মামলাটি হয়েছে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে৷ ফলতা ও উস্তি থানায় ২টি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করা হয়েছে৷ গ্রেফতার করা হয়ছে ৭ জনকে৷ শিরাকোলে প্ররোচনা ছাড়া ডায়মণ্ড হারবারে আর কিছু ঘটেনি বলেও এদিন উল্লেখ করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷
অন্যদিকে, সৌগত রায় বলেন, তৃণমূলের রিপোর্ট কার্ড পেশ করার দিন ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করা হয়েছে৷ দৃষ্টি ঘোরাতেই এই কাজ৷ দিল্লিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেন তিনি৷