কলকাতা:লকডাউন চালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জনজীবন ধীরে ধীরে সচল করে তোলাই এখন সরকারের লক্ষ্য। সেই মত সোমবার থেকে রাজ্যে বেসরকারি বাস, ট্যাক্সি পরিষেবা শুরুর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সোমবার আদৌ বেসরকারি বাসের চাকা গড়াবে কিনা তা নিয়ে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সংশয় অব্যাহত। রাজ্য সরকার বর্তমান পরিস্থিতিতে বাস ভাড়ার বিষয়ে কোন হস্তক্ষেপ করবেনা বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন। সেই সুযোগে বাস মিনিবাস মালিক সংগঠন একলাফে তিনগুণ ভাড়া বাড়ানোর কথা ঘোষণা করে।এর জেরে ঘরে বাইরে সমালোচনার সম্মুখীন হয়ে ১৮০ ডিগ্রি অবস্থান বদল করেছে নবান্ন। শনিবার পরিবহন কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন রাজ্য সরকার বাস ভাড়া বৃদ্ধি অনুমোদন করছে না।
অন্যদিকে চলতি পরিস্থিতিতে বাস ভাড়া না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে বাস মালিকরা দাবি করেছেন। ভাড়া না বাড়ানো হলে ২০ জন যাত্রী নিয়ে বাস চালানো তাদের পক্ষে অসম্ভব বলে দাবি করেছে বাস মালিক সংগঠন।রাজ্য সরকার করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের দুর্দশার কথা বলে বাস ভাড়া বাড়াতে না দিলেও ডিজেলের ওপর সেস কমিয়ে বাস মালিকদের সুরাহা করে কেন দিচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
পরিবহণ মন্ত্রী এদিন নবান্নে সাংবাদিকদের বলেন ‘বেসরকারি বাসের ভাড়া নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। ভাড়ার বিষয়ে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাই কোনও বাসেই ভাড়া বাড়াবে না সরকার। সরকারি বাসের পরিষেবা আরও বাড়ানো হবে।’ এ দিন শুভেন্দু জানান, সরকারি বাসে যেমন ভাড়া বাড়ছে না, তেমনই বেসরকারি বাস-মিনিবাসেও কোনও ভাড়া বাড়বে না। তবে যাতে মানুষ নিজের গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন, তাঁর জন্যে আরও সরকারি বাস নামানো হবে। এই মুহূর্তে কলকাতা থেকে ১৫টি রুটে বাস চলছে। ডিপো থেকে বাস ছাড়ার সময় কমিয়ে আধ ঘণ্টা করা হয়েছে। বাসের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এ ছাড়া আরও এক হাজার ওলা-উবর নামবে। ইতিমধ্যে ২০০টি অ্যাপ ক্যাব চলছে। তা ছাড়া ধাপে ধাপে গণ পরিবহণে আরও গাড়ি নামানো হবে।পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “ট্রাম পরিষেবাও চালু করা হবে। জলপথেও পরিবহণের বিষয়টি নিয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে। ধাপে ধাপে হলুদ, নীল-সাদা ট্যাক্সিও নামবে। যে ট্যাক্সি মিটারে চলে, তাঁদের ভাড়া বাড়ানোর কোনও বিষয়ই নেই। অটোর বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে।
”পরিবহণ মন্ত্রী আরও জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে শহরে অ্যাপ নির্ভর ক্যাবের সংস্থার বাড়ানো হবে। বাসে ওঠার আগে স্যানিটাইজার ও মাস্কের বাধ্যতামূলক থাকছে। অটোর ক্ষেত্রে মুখ্যসচিবের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে যথাসময়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। বাসের সঙ্গে অ্যাপ নির্ভর সার্ভিস বাড়ানো হয়েছে। এই সঙ্গে আস্তে আস্তে নীল-সাদা ট্যাক্সিও নামানো হবে বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু।চলতি পরিস্থিতিতে বাস ভাড়া না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে বাস মালিকরা দাবি করেছেন। ভাড়া না বাড়ানো হলে ২০ জন যাত্রী নিয়ে বাস চালানো তাদের পক্ষে অসম্ভব বলে জানিয়েছেন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় ।পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য সরকার করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের দুর্দশার কথা বলে বাস ভাড়া বাড়াতে আপত্তি জানাচ্ছে। কিন্তু ডিজেলের ওপর লিটার ১৮ টাকা সেস কেন কমিয়ে বা প্রত্যাহার করে বাস মালিক ও সাধারণ মানুষের সুরাহা করে দেওয়া হচ্ছে না।