কলকাতা: করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বাজারগুলিতে নজরদারি বাড়াচ্ছে কলকাতা পুর নিগম। বাজার বিভাগের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, পুরবাজারগুলিতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা হচ্ছে কিনা তার উপর নজরদারি চালাতে রবিবার থেকে মেয়র পারিষদ আমিরুদ্দিন ববির নেতৃত্বে পুরবাজারগুলিতে অভিযান চলছে। কিন্তু বাজার চলাকালীন সবসময় নিয়মিত নজরদারি চালাতে মার্কেট সুপারিটেন্ডেন্টদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। উত্তর কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতা ও বেহালা অঞ্চল এই তিনটি অংশে ভাগ করে এক একটি অঞ্চলের পুরবাজারগুলির নজরদারির জন্য নির্দিষ্ট সুপারিটেন্ডেন্ট বা সুপারিটেন্ডেন্টরা থাকবেন। উল্লেখ্য, কলকাতা পুর নিগমর প্রায় ১৬ জন মার্কেট সুপারিটেন্ডেন্ট আছেন। লকডাউনের পর থেকে তারা বাড়ি বসেই কাজ করছিলেন। এদের মধ্যেই কলকাতা বা তার সংলগ্ন এলাকায় থাকা আধিকারিকদের এই কাজে নিয়োগ করা হবে।
এদিকে, আজ বাজার বিভাগের মেয়র পারিষদ আমিরুদ্দিন ববির নেতৃত্বে বিভাগীয় আধিকারিকরা দক্ষিণ কলকাতার পার্ক সার্কাস, গড়িয়াহাট, ল্যান্সডাউন ও লেক মার্কেট পরিদর্শন করেন। বাজারগুলিতে দোকানের বাইরে সবজি বা পণ্যের ডালা থাকায়, ক্রেতাদের চলাফেরায় অসুবিধা হচ্ছে এই জানিয়ে দোকানের মধ্যেই ব্যবসায়ীদের ডালা রাখার নির্দেশ দেন। বাজারের মধ্যে ভিড় এড়াতে পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর অস্থায়ী সবজি ব্যবসায়ীদের পার্শ্ববর্তী রাস্তার ধারে বসতে বলেন মেয়র পারিষদ। আগামীকাল মেয়র পারিষদ সন্তোষপুর ও বাশদ্রোনি বাজার পরিদর্শন করবেন।
অন্যদিকে লকডাউন চলাকালীন শিশুদের মিড-ডে-মিল নিশ্চিত করলো কলকাতা পুর নিগম। কলকাতা পুর নিগমর আওতাধীন স্কুলগুলিতে এবার মিলবে দু’মাসের মিড ডে মিল। বিভাগীয় বৈঠকে এমনটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার একথা জানান কলকাতা পৌরসভার মেয়র পারিষদ শিক্ষা অভিজিৎ মুখার্জি।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুর নিগমর উচ্চপদস্থ আধিকারিক। সেখানেই মিড ডে মিল সম্পর্কিত এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এদিন বৈঠক শেষে অভিজিৎ মুখার্জি জানান, ‘সিদ্ধান্ত হয়েছে, পুরো স্কুলগুলির প্রায় ২৫ হাজার বাচ্চাকে রেশন দেওয়া হবে। মজুদ থাকা চাল সমান ভাগ করে দেওয়া হবে বাচ্চাদের মধ্যে। মোটামুটি বাচ্চা পিছু পাঁচ কেজি চাল, দুই থেকে তিন কিলো আলুর দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। পহেলা বৈশাখের পর থেকেই বিভিন্ন স্কুল থেকে এই রেশন দেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়া ২৪ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করে দেওয়া হবে।’
অন্যদিকে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে খাদ্যশস্য সামগ্রী বিলি করা, রেশনের কুপন বিলের ক্ষেত্রে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ বামেদের। এই মর্মে এদিন মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করতে উদ্যোগী হন ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্য বাম কাউন্সিলররা। যদিও পুর নিগময় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও মেয়রের দেখা না পেয়ে ফিরে যান তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, বারবার দেখা করার অনুমতি চেয়েও মেয়র সময় দিচ্ছেন না। কমিশনার খলিল আহমেদ-এর দেখা পাননি তারা। সে ক্ষেত্রে পুর নিগমর সেক্রেটারি হরিহার প্রসাদ মন্ডলের কাছে তারা স্মারকলিপি জমা দিয়ে আসেন। পাশাপাশি, এদিন অপর একটি স্মারকলিপি মেয়রের ঘরে জমা দিয়ে এসেছেন বাম কাউন্সিলররা।