ভাটপাড়া: ভোট পরবর্তী হিংসা অব্যাহত ভাটপাড়ায়৷ অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে ১৬ বছরের এক কিশোরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুই দুষ্কৃতী৷ থানার খুব কাছেই ঘটে এই ঘটনা৷ এর পর থেকেই ভাটপাড়া গুলিকাণ্ডে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷
আরও পড়ুন- মর্মান্তিক! রাত ভর বাড়ির বারান্দায় পড়ে করোনা আক্রান্তের দেহ, দেখা নেই প্রশাসনের
প্রথমত, থানার কাছে গুলি চললেও কেউ দেখতে পেল না কেন? দুষ্কৃতীরা গুলি করে পালিয়ে গেল, অথচ সকলের নজর এড়িয়ে গেল কী ভাবে? এছাড়াও প্রশ্ন উঠছে, এটি খুন না আত্মহত্যা? এই বিষয় নিয়েও ধন্দে রয়েছে পুলিশও৷ তাঁরা জানাচ্ছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হবে৷ এদিকে যিনি এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করছেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ঘটনার দেড় মিনিট পর তিনি ঘটনাস্থলে আসেন৷
তৃতীয়ত, যে দুষ্কৃীতিদের বিরুদ্ধে তাঁকে হত্যা করার অভিযোগ, তারা কি ধরা দেওয়ার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ঘটনাস্থলেই ফেলে যাবে? উল্লেখ্য, ওই কিশোরের দেহের পাশেই মিলেছে আগ্নেয়াস্ত্র৷ খুনি এত বড় প্রমাণ ফেলে রেখে গেল কেন? এদিকে, নিহত কিশোরের হাতে দেখা গিয়েছিল ঘিলু৷ পুলিশের বক্তব্য, আত্মহত্যা করার জন্য যখন কেউ গুলি চালাবে তখন ঘিলু ছিটকে আসতে পারে৷ অথবা তাঁর হাত চেপে রেখে কেউ মাথার পিছনে পয়েন্ট ব্ল্যঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করলে এমনটা হওয়া সম্ভব৷ ফলে খুন না আত্মহত্যা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷ অন্যদিকে, এদিন ঘটনার সময় রাস্তায় তেমন লোক ছিল না৷ আবার ষষ্ঠ দফার ভোট শেষে বাহিনীকে ভোটের কাজ বোঝাচ্ছিলেন পুলিশ কর্তারা৷ আচমকা গুলির শব্দে তাড়া বেড়িয়ে আসেন৷
উল্লেখ্য, ভাটপাড়া থানায় এই কিশোরের বিরুদ্ধে চারটি এফআইআর রয়েছে৷ তার নামে বোমাবাজির অভিযোগ রয়েছে৷ ৫০০ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন জায়গায় বোমাবাজি করত রাজা চৌধুরী নামে ওই কিশোর৷ যার জেরে ভোটের আগে গত ২৮ মার্চ তাকে সতর্কতামূলক গ্রেফতার করা হয়৷ পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়৷ জানা গিয়েছে, টাকার বিনিময়ে যে কোনও দলের হয়েই কাজ করত সে৷ বাবা না থাকায় সেই সংসার চালাত৷
আরও পড়ুন- করোনার কোপে কলকাতা মেট্রো, কমছে ট্রেনের সংখ্যা
রাজার মায়ের দাবি, তাঁর ছেলেকে গুলি করা হয়েছে৷ রাজার কাকা আবার জানান, এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে ৫০০০ টাকা দিয়ে মামলা মিটিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয় পুলিশ৷ তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে৷ পুলিশের পাল্টা বক্তব্য, এই কিশোরকে বহুবার বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে৷ পড়াশোনা করার জন্যেও টাকা দেওয়া হয়েছে৷ রাজার পরিবার অত্যন্ত গরিব হওয়ায় তাঁদের টাকা দিয়ে সাহায্য করার কথা বলা হয়েছিল৷ মামলা মেটানোর কথা বলা হয়নি৷