কলকাতা: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে বিজেপি’র সাংগঠনিক প্রস্তুতি ও বাংলা দখলের রূপরেখা তৈরি করতে দিল্লিতে সপ্তাহব্যাপী বৈঠক ডাকা হয়েছিল৷ ওই বৈঠকে বাদানুবাদের জেরে আচমকা দিল্লি ছেড়ে কলকাতায় ফিরে আসেন মুকুল রায়৷ বৈঠক ছেড়ে তিনি রাজ্যে ফিরতেই শুরু হয় তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা৷
আরও পড়ুন- পুলিশের চাকরি ছেড়ে সবজি বেচলে বেশি সম্মান পেতাম! আক্ষেপ জখম পুলিশ কর্মীর
এদিকে, গেরুয়া শিবির ছেড়ে মুকুল রায় ফের ঘাসফুলেই ফিরতে চলেছেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর৷ কিন্তু মুকুল রায়কে নিয়ে আপাতত মাথা ঘামাতে রাজি নন তৃণমূল হাইকমান্ড৷ তাঁকে দলে ফেরাতে তৃণমূল বিশেষ উৎসাহী নয় বলেও সূত্রের খবর৷ তবে গত চার মাস ধরে মুকুল রায় ও তাঁর ছেলে শুভ্রাংসু রায় নাকি লাগাতার তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ তাঁরা সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে, বিষয়টি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই সঁপেন মুখ্যমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন- বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসে কেন লকডাউন বাংলায়? মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি SUCI-র
একদা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডান হাত ছিলেন মুকুল রায়৷ কিন্তু তৃণমূল নেত্রী ও দলের সঙ্গে তিক্ততা বাড়ার পর ২০১৭ সালে তিনি দল ছেড়ে বিজেপি’তে যোগ দেন৷ সারদা চিটফাণ্ড-কাণ্ডে সিবিআই তাঁকে জেরা করার পর থেকেই দলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে ফাটল ধরে৷ এই কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ায় একাধিক তৃণমূল নেতার৷ তবে বিজেপিতে নাম লেখানোর পর আর সিবিআই-এর সম্মুখীন হতে হয়নি তাঁকে৷ জানা গিয়েছে দলে ফেরা নিয়ে তৃণমূলের সামনে তিনটি দাবি রেখেছেন মুকুল রায়৷ তবে এই তিনটি দাবি নিয়েই অনীহা রয়েছে তৃণমূলের৷ প্রথমত তাঁর দাবি, যে সকল বিধায়ক এবং নেতারা তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদরে সকলকেই দলে ফেরাতে হবে৷ এই প্রস্তাবের জবাবে তৃণমূল জানিয়ে দিয়েছে, ‘কেস-টু-কেস’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ সকলকে দলে ফেরানো হবে না৷
আরও পড়ুন- এবার মোবাইলে করা যাবে করোনা টেস্ট, ১ ঘণ্টায় রিপোর্ট! নয়া আবিষ্কার IIT খড়গপুরের
মুকুল রায়ের দ্বিতীয় দাবি হল, দল ও সরকারে তাঁর ছেলের ‘ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত’ করতে হবে৷ মুকুলের এই আবদারেও সায় নেই তৃণমূলের৷ তাঁর তৃতীয় দাবি হল, তিনি আগে যে পদে ছিলেন সেই পদেই ফেরাতে হবে তাঁকে৷ তবে মুকুল রায়কে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দলে ফেরার পর তাঁর ভূমিকা কী হবে তা ঠিক করবে হাইকমান্ড৷
আরও পড়ুন- আগামীর জন্য বৈদ্যুতিন গাড়ি বানাচ্ছেন বঙ্গতনয়া আত্রেয়ী
অমিত শাহের তলব পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন মুকুল রায়। কিন্তু বিজেপি’র বৈঠক চলার মাঝেই কলকাতায় ফিরে আসেন তিনি৷ তারপর থেকেই জল্পনা বাড়তে থাকে৷ কিন্তু বিজেপি’র সঙ্গে মনোমালিন্যের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন মুকুল রায়৷ কলকাতায় ফিরে তিনি বলেন, চার-পাঁচদিন ধরে বৈঠক হবে, এটা জানা ছিল না৷ আমার রেটিনার সমস্যা রয়েছে। একটা ইনজেকশন নিতে হবে। সেই তারিখ আগে থেকেই ঠিক করা ছিল৷ তাই ফিরে এলাম। এর মধ্যে কোনও গুঞ্জন নেই। পরে যখনই কোনও বৈঠকে যোগ দেওয়ার প্রয়োজন হবে, নেতৃত্ব যখনই আমাকে ডাকবেন, আবার যোগ দেব।’’ বিতর্ক ধামাচাপা দিতে মুকুল রায় আরও বলেন, ‘‘ ৯ মাস পর নির্বাচন। দল আমাকে যা দায়িত্ব দেবে, আমি তা পালন করব। বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতা দখল করবে।’’