হলদিয়া: সরকারি কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে কটাক্ষ করলেন নরেন্দ্র মোদী। বললেন, “দেশের সব রাজ্যে সপ্তম পে কমিশন লাগু হয়ে গিয়েছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গে হয়নি। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের সরকার নিজেদের কর্মচারীদের বেতন সঠিক সময়েও দিতে পারেন না।” রাজ্যে ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু হয়েছে ২০২০ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে৷ ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু হলেও বকেয়া মহার্ঘ ভাত নিয়ে রয়েছে বিতর্ক৷ তবে, সেই বিতর্ক থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে বেতন পেয়ে থাকেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা৷
গত ৪ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীরা সপ্তম পে কমিশনের আওতায় বেতন পাচ্ছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের কর্মচারীরা এখনও পুরনো ষষ্ঠ পে কমিশনের আওতায় রয়েছেন। সেই ইস্যুকেই হলদিয়ার জনসভার মঞ্চ থেকে উস্কে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছেন, “সপ্তম পে কমিশন দেশে বিভিন্ন রাজ্যে লাগু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এখনও তা লাগু হয়নি। এমনকি আমাকে এও জানানো হয়েছে যে, এখানকার সরকার নিজেদের কর্মচারীদের সময় মতো বেতনও দিতে পারে না।”
গত বেশ কয়েক মাস ধরেই রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের মধ্যে বেতন কমিশনের সুপারিশ এবং ডিএ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় দফার জন্য ক্ষমতায় এসে মোদি সরকার তৎক্ষণাৎ সরকারি কর্মচারীদের জন্য সপ্তম পে কমিশনের অনুমোদন দিয়েছিল। মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা, মহারাষ্ট্র-সহ ধীরে ধীরে সব রাজ্য সরকার নিজেদের কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশনের আওতায় নিয়ে এসেছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কর্মচারীদের জন্য তখনও পঞ্চম পে কমিশনও লাগু ছিল। চাপে পড়ে যায় গত বছর জানুয়ারি থেকে রাজ্যে ষষ্ঠ পে কমিশন চালু হয়েছে। কিন্তু তারপরে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ কমেনি৷ কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের বেতনের ফারাক যত বেড়েছে তাদের ক্ষোভও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্যের কোষাগারে টাকা নেই বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দাবি করলেও লাভ হয়নি কিছুই।
সেই ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত করার জন্য এ বছরের শুরুতেই সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। কিন্তু তাতেও ক্ষোভ কিছুমাত্র প্রশমিত হয়নি। রবিবার হলদিয়ার মঞ্চ থেকে সেই ক্ষোভকেই আরও উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি কর্মচারীদের সঠিক সময়ে বেতন দেওয়া নিয়েও রাজ্য সরকারকে তোপ দেগেছেন তিনি। যদিও এই অভিযোগের কোনও জবাব মেলেনি তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।