পুরোহিত ভাতায় দুর্নীতি? তালিকায় তৃণমূল নেতাদের নাম! উঠল অভিযোগ

পুরোহিত ভাতায় দুর্নীতি? তালিকায় তৃণমূল নেতাদের নাম! উঠল অভিযোগ

কলকাতা: পুজোর আগে ঘটা করে পুরোহিতদের জন্য ভাতা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তখনই বিজেপির তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, এই প্রকল্প আসলে দলের নেতাদের টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রকল্প৷ বিরোধীদের সেই কথাই যেন মিলে যাচ্ছে পুরোহিত ভাতার বিতর্কিত তালিকায়! এবার পুরোহিত ভাতার তালিকা ঘিরেও উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ৷

অভিযোগ, ভাতার সেই তালিকায় প্রকৃত পুরোহিতদের নামের বদলে থাকছে তৃণমূল নেতাদের নাম৷ তালিকায় ঘোষ, সরকার, বিশ্বাস পদবির ব্যক্তিদেরও নাম রয়েছে৷ যারা কখনও পুরোহিত হতে পারে না বলে দাবি স্থানীয় পুরোহিত সংগঠনের৷ এমনই ঘটনা ঘটেছে নদীয়ার তেহট্ট ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে৷ গত মাসে পশ্চিমবঙ্গে ৮,০০০ পুরোহিতকে মাসে ১,০০০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেই তালিকায় পুরোহিতদের বদলে থাকছে তৃণমূল নেতাদের নাম৷ তেহট্টের পুরোহিতদের অভিযোগ, প্রকৃত পুরোহিতদের নাম না থাকলেও নাম রয়েছে তৃণমূল জেলা পরিষদ সদস্য টিনা সাহার স্বামী নিলয় সাহার। এই নিয়ে বিডিওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন পুরোহিতরা।

একই ঘটনা ঘটেছে জয়নগরেও৷ এবিষয়ে যার দিকে অভিযোগের আঙুল উঠছে, সেই জয়নগর মজিলপুরের পুর-প্রশাসক তথা কংগ্রেস নেতা সুজিত সরখেল বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে পুরোহিতের কাজ করছেন এমন অনেক ব্যক্তি আছেন, যাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। পৌরসভাকে অজ্ঞাত রেখেই তালিকা প্রকাশ করেছে শাসকদল। তিনি আরও বলেন, জয়নগর স্থানের নামকরণই হয়েছে দেবী জয়চণ্ডীর নাম থেকে। কিন্তু জয়চণ্ডী মন্দিরের পুরোহিতের নামই এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এমনকি  জয়নগরে বহু প্রাচীন মন্দির আছে। কিন্তু সেই সব মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত পুরোহিতদের অনেকেই এই তালিকায় স্থান পাননি। তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়কের মদতেই পৌরসভাকে অজ্ঞাত রেখে পুরোহিতদের এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আর বেছে বেছে তৃণমূল কর্মীদেরই ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে এবং সম্পূর্ণ ভাবে  স্বজন পোষণ হয়েছে।

তবে শাসকদলের বিরুদ্ধে ওঠা চেয়ারম্যানের সব দাবিতে নস্যাৎ করে তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস বলেন, জয়নগর মজিলপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান একটা দুনীর্তিগ্রস্ত, অপদার্থ চেয়ারম্যান৷ যিনি পৌরসভাটাকে শেষ দিচ্ছে। পুরোহিত ভাতা তালিকা সম্পর্কে তার জ্ঞান আছে কিনা জানা নেই। জ্ঞান থাকলে চেয়ারম্যান এই ভাবে বলতেন না। যে তালিকাটা প্রকাশ হয়েছে সেটি সঠিক হয়নি। তালিকাটা ভুলে ভরা। এ বিষয়ে ডিএম এবং এসডিও কাছে জানাচ্ছি। যাতে তালিকাটি সংশোধন করে আবার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুসলিম ইমামদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে৷ যার জেরে তিনি মুসলিম তোষণের রাজনীতি করছেন বলেও একাধিকবার অভিযোগ তোলে বিজেপি৷ তাই এবার একুশের ভোটের আগে হিন্দুরা যাতে বিজেপিমুখী না হয়ে পড়ে সেজন্য পুরোহিতদেরও সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী, এমনই মত বিশেষজ্ঞদের৷ কিন্তু সেই প্রকল্পেও যদি দুর্নীতি শুরু হয়ে যায়, তাহলে ভোটের হিসেব মিলবে তো? উঠছে প্রশ্ন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × four =