‘মোকা’র অভিমুখ মায়ানমারের দিকে, বাংলায় প্রভাব কতটা? আতঙ্কের মাঝেই আমূল বদল আবহাওয়ায়!

কলকাতা: ‘মোকা’ নিয়ে ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ৷ দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্তটি ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে৷ সোমবারের মধ্যেই শক্তি বাড়িয়ে তা নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার কথা৷ কিন্তু কোন পথে যাবে এই ঘূর্ণিঝড়? কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ‘মোখা’র গতিপ্রকৃতি নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। সোমবার ঘূর্ণাবর্তটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পরেই জানা যাবে কোন পথে ধেয়ে যাবে ঘূর্ণিঝড়। নিম্নচাপ শক্তি সঞ্চার করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর এটি ক্রমশ দিক পরিবর্তন করতে পারে বলে আবহবিদদের ইঙ্গিত।
সোমবার নিম্নচাপ তৈরির পর ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ এবং শক্তি নিয়ে নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব হবে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। তবে আবহাওয়াবিদদের ধারণা, এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলের তুলনায় মায়ানমারের দিকেই ‘মোকা’র ধেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।আমেরিকা ও ইউরোপের তরফেও এমনই পূর্বাভাস মিলেছিল। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে ‘মোকা’র প্রভাব কেমন পড়বে, তা এখনও অনিশ্চিত হলেও আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, আগামী কয়েকদিন রাজ্যজুড়ে তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়বে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ৪০ ডিগ্রি ছুঁতে পারে কলকাতার তাপমাত্রা৷ পশ্চিমের জেলাগুলিতেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি পেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ রবিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ডিগ্রি বেশি। আপাতত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে ঝড়-বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনাও নেই।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, ‘মোকা’র পরোক্ষ প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে অস্বস্তিকর আবহাওয়া তৈরি হবে৷ হাওয়ার গতিপথ পরিবর্তন হবে। সেই ধাক্কাতেই আগামী ৩ দিনে তাপমাত্রা ২-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে। কলকাতায় তাপমাত্রা মঙ্গল ও বুধবার ৩৯ ডিগ্রিতে পৌঁছবে। তবে উত্তরবঙ্গে পার্বত্য এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে৷ দার্জিলিং এবংও কালিম্পং-এ আগামী কয়েক দিন হালকা মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গের নীচের দিকের জেলা উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই৷
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে কোনও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে জলীয় বাষ্পের স্রোত সেদিকেই ধেয়ে যায়। ‘মোখা’ উপকূল থেকে যত দূরে সরবে, তত বেশি করে বাড়বে গরমের প্রভাব৷ এখনও পর্যন্ত মোকার সম্ভাব্য অভিমুখ যেহেতু মায়ানমারের দিকে, তাই আন্দামানে ঝড়-বৃষ্টি ক্রমশ বাড়বে। পর্যটকদের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সমুদ্র ও উপকূলবর্তী এলাকায় বিনোদনমূলক যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি নিকোবর দ্বীপপুঞ্জেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে প্রবল বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া।