মুর্শিদাবাদ: রাজ্যে করোনা বাড়লে তার জন্য দায়ী থাকবেন একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ ও ভগবানগোলার জনসভার মঞ্চ থেকে করোনা পরিস্থিতি ও টিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ভারতবাসীকে টিকা না দিয়ে বাইরের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া নিয়ে নমোকে ‘ঘর জ্বালানো পর ভোলানো’ বলে তোপ দাগতেও ছাড়লেন না তিনি। পাশাপাশি ভারত সরকারকে ‘অপদার্থ’ বলে আক্রমণও করেন মমতা।
গত এক সপ্তাহ ধরে দেশে ভয়ঙ্কর চেহারা নিয়েছে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি। বিভিন্ন রাজ্যে ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে রাত্রিকালীন কার্ফু। দেশের রাজধানী দিল্লিতে সোমবার রাত ১০টা থেকে ৬ দিনের লকডাউন জারি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থাও মারাত্মক। সোমবার একদিনে রাজ্যে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮ হাজারেরও বেশি, মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও বাংলায় ভোট প্রচারে কোনও খামতি রাখছে না বিজেপি। সোমবার দলের পক্ষ থেকে সরাসরি জানানো হয়েছে করোনার জন্য রাজ্যে নরেন্দ্র মোদীর কোনও জনসভা বাতিল করা হচ্ছে না। এই নিয়ে এদিন প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করেন মমতা। তিনি বলেন, “এখনও লজ্জা নেই প্রধানমন্ত্রী আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। কোথায় করোনা বাঁচাবে, তা না করে সারাক্ষণ বাংলায় ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ভোট করাচ্ছে। ভোটের জন্য প্রায় দেড় লক্ষ পুলিশ এসেছে বাংলায়। আর বিজেপির মিটিং-মিছিল করতে প্রায় এক লক্ষ বহিরাগত গুন্ডা এসেছে। নরেন্দ্র মোদী আপনার লজ্জা করে না? এই করোনার সময়েও এক লক্ষ বহিরাগত গুন্ডা বাংলায় ঢুকিয়েছেন। এরা রাজ্যে করোনা ছড়িয়ে তারপর পালিয়ে যাবে। আর ভোটের পর সব দায়িত্ব আমার উপরে। আমি নরেন্দ্র মোদীকে এখনই বলে দিচ্ছি, রাজ্যে করোনা বাড়লে তার দায়িত্ব আপনার।”
করোনার টিকা নিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী লাগামছাড়া আক্রমণ করেন নরেন্দ্র মোদীকে। তিনি বলেন, “দেশে করোনার যত ওষুধ ছিল তার ৬৪ শতাংশ ওষুধ নরেন্দ্র মোদী বাইরের দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এদিকে আমাদের দেশের মানুষ এখন ওষুধ পাচ্ছেন না। কালকে উনি বললেন, এখন খোলা বাজারে ওষুধ পাওয়া যাবে। কিন্তু খোলা বাজারে ওষুধটা কোথায়? সব তো পাঠিয়ে দিয়েছো বিদেশে। বাইরের দেশে ওষুধ পাঠিয়ে তুমি সাধু সাজার চেষ্টা করছো। কিন্তু নিজের দেশের চিন্তা করো না। ঘর জ্বালানো পর ভোলানো। আগে নিজের দেশে দাও। তারপর অন্য দেশে পাঠাবে। ভারত সরকার একটা অপদার্থ সরকার।”