রোগীর বরাদ্দ টাকায় ১৫০ স্বাস্থ্যকর্তাকে ২০ হাজারি মোবাইল ‘উপহার’!

রোগীর বরাদ্দ টাকায় ১৫০ স্বাস্থ্যকর্তাকে ২০ হাজারি মোবাইল ‘উপহার’!

কলকাতা: একদিকে করোনা, অন্যদিকে দীর্ঘ লকডাউন৷ তার উপর প্রাকৃতিক দুর্যোগ৷ ত্রিফলা চাপে কোষাগারে টানাটানি পড়েছে রাজ্যে৷ চকম আর্থিক টানাটানির মধ্যেও থামছে না কেলেঙ্কারি৷ অভিযোগ, রোগীদের বরাদ্দ টাকা থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতরে প্রায় ১৫০ জন স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে শুরু করে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার দামি মোবাইল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷

বাংলার একটি দৈনিকে প্রকাশ, রোগীদের জন্য বরাদ্দের সঞ্চিত টাকার সুদ থেকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার দু’তিন ধরনের মোবাইল কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে জেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সমিতিতে৷ বার্ষিক পরিচালন সমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ বিতর্কের জল পৌঁছে গিয়েছে স্বাস্থ্যভবনেও৷ স্বাস্থ্যভবনকে অন্ধকারে রেখে ‘সিদ্ধান্ত’ বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে৷ বিষয়টি স্বাস্থ্যভবনে জানাজানি হতেই আকাশ থেকে পড়েছেন খোদ আধিকারিকরা৷ কিছুই না জানিয়ে এমন সিদ্ধান্ত কীভাবে? বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হচ্ছে বলে খবর৷

দৈনিকে প্রকাশ, রোগীদের জন্য বরাদ্দের সঞ্চিত টাকার সুদ থেকে ইতিমধ্যেই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে শুরু করে উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, পরিবার কল্যাণ আধিকারিক, একাধিক এসিএমওএইচ-সহ ১৩ জনকে মোবাইল কিনে দেওয়া হয়েছে৷ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ২৫ হাজার টাকায় স্যামসুংয়ের মোবাইল ও বাকিদের ২০ হাজার টাকার মোবাইল ‘উপহার’ দেওয়া হয়েছে৷

জেলা হাসপাতালের সুপার থেকে তিনটি মহকুমা হাসপাতালের ৩ জন সুপার থেকে ৭টি স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার, ৫৬টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার, ১২টি ব্লকের বিএমওএইচকে ২০ হাজার টাকার মোবাইল কিনে নিতে বলা হয়েছে৷ প্রত্যেককেই সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সঞ্চিত অর্থের সুদের টাকা থেকে মোবাইল কিনতে বলা হয়েছে বলে খবর৷ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গোটা ঘটনার কথা স্বীকার করে বাংলার একটি দৈনিকে জানিয়েছেন, সবটাই করা হয়েছে জনস্বার্থে৷ কিন্তু, ফ্রিতে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে গিয়ে যখন সরকারের কোষাগারে টানাটানি পড়েছে, তখন সাধারণ মানুষের করের টাকায় রোগীদের জন্য বরাদ্দের সুদের অর্থ থেকে কেন দামি মোবাইল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন৷ সুদের টাকা দিয়ে চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা যেত না? সেটাই কি বেশি জনস্বর্থে কাজ হত না? প্রশ্ন সাধারণ জনতার৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *