কলকাতা: কিছুদিন আগেই বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন তিনি। গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর পরেও ফের প্রাক্তন দলনেত্রীর সঙ্গে ২২ মিনিটের সাক্ষাৎ নিয়ে স্বভাবতই বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছিল জোর চর্চা। বিজেপিতে থাকতে না পেরে কি ভোটের মুখে ফের পুরোনো দলেই ফিরে আসবেন বনগাঁর বিধায়ক? চলছিল জল্পনা। এবার সেই জল্পনাকেই সত্যি করে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বেসুরো হলেন বিশ্বজিৎ দাস।
রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে মতুয়াদের ব্যবহার করা হচ্ছে, এদিন বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ আনলেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানো বিশ্বজিৎ দাস। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “মতুয়ারা খুব সহজ সরল মানুষ। তাঁদের এভাবে রাজনীতির শিকার হতে হচ্ছে। এর বিরুদ্ধেই আমার ক্ষোভ।” হঠাৎ কেন দলের বিরুদ্ধে চটলেন বনগাঁর বিধায়ক? জানা যাচ্ছে, গতকাল ঠাকুরনগরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভার প্রসঙ্গ তুলেই এদিন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর মূল ক্ষোভ যে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের গেরুয়া সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে, নাম না করলেও তা স্পষ্ট হয়েছে বক্তব্য থেকেই।
শান্তনু ঠাকুর সিএএ নিয়ে ‘কুমিরের কান্না’ কাঁদছেন, সাংবাদিকদের সামনে এমনটাই দাবি করেন বিশ্বজিৎ দাস। শুধু তাই নয়, তিনি আরো বলেন, “ব্ল্যাকমেল করে পার্টিকে উনি যেভাবে রাস্তায় নামাচ্ছেন তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দলকে নিয়ে ব্ল্যাকমেলের এই রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত।” ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতিকেও শান্তনু ঠাকুর অসম্মান করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিশ্বজিৎ দাস।
বস্তুত, বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর মতুয়া মহাসভার প্রধানও। মতুয়াদের দাবিদাওয়া নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দ্বারস্থ হতে দেখা গেছে তাঁকে। কিন্তু শুধুমাত্র মতুয়াদের নেতাই নন তিনি, রাজ্যে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষও রয়েছে, জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্বজিৎ দাস। দলের বিরুদ্ধে এই অসন্তোষের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নিতে চলেছেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ফের সকলকে ডেকে জানিয়ে দেবেন তিনি। এমনকি প্রয়োজনে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার কথাও শোনা গেছে বনগাঁর বিধায়কের মুখে। বেশ কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা নিয়ে যে জল্পনা শুরু হয়েছিল বিশ্বজিৎ দাসের বেসুরো মন্তব্য এদিন আরো একবার তাকেই উস্কে দিয়েছে, সন্দেহ নেই।