কলকাতা: সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ ব্রিগেডের মঞ্চে বিজেপি শিবিরে নাম লিখিয়েছেন এককালীন তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যসভার সাংসদ তথা দেশের অন্যতম স্বনামধন্য অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। গলার উত্তরীয় পরিয়ে তাঁকে আজ স্বাগত জানান বাংলার বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাই গেরুয়া শিবিরের হয়ে নিজের জীবনের প্রথম ব্রিগেড মঞ্চে দাঁড়িয়ে মিঠুন চক্রবর্তী বললেন, ‘আজকের দিনটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো’।
এদিন মিঠুন চক্রবর্তীকে মঞ্চে বক্তৃতার জন্য ডাকার মুহূর্তে কেউ একজন তার অত্যন্ত পরিচিত একটি সংলাপ আওড়ালেন, ‘মারবো এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে’! অনেকেই ভেবে ছিল, হয়তো প্রথমবারের জন্য ব্রিগেড মঞ্চের ভাষণে আগুন ঝড়াবেন মহাগুরু। কিন্তু তেমন মারকাটারি ভাষণ দিলেন না তিনি। মিঠুন বললেন, “আজকের দিনটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। এইজন্য বলছি স্বপ্ন, আমি আসছি এমন একটা জায়গা থেকে, জোড়াবাগান এর দিক থেকে যার দুদিকটাই অন্ধকার, ব্লাইন্ড লেন। থানার পিছনে না দেখলে জায়গা খুঁজে পাওয়া যেত না। ঠিকানায় ব্র্যাকেটে লিখতে হত জোড়াবাগান থানার পিছনে। সেখান থেকে আজ ভারতবর্ষের তাবড় নেতাদের সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়াবো ভাবিনি। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের বৃহত্তম নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এখানে আসছেন। স্বপ্ন দেখেছিলাম কিছু একটা করব। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে থাকাও স্বপ্নের“। সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন, “দাদার প্রতি ভরসা রাখবেন সকলে, দাদা কখনো ভয় পেয়ে পালিয়ে যাইনি। এক ছোবলে ছবি তাই কেউ পালাতে পারবে না।” মিঠুনের দাবি, তাঁর নাম মিঠুন চক্রবর্তী, তিনি যা বলেন তাই করেন।একই সঙ্গে ব্রিগেডে আগত সকল বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, বাংলাতে সবকিছুতে অধিকার তাদের, তাই কেউ কিছু ছিনিয়ে নিতে এলে তাঁদের মত কিছু লোক দাঁড়িয়ে যাবে সামনে।
আরও পড়ুন- পর্দার ‘মহাগুরু’ও ছিলেন চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে! ‘ফুল’ বদলে ফের রাজনীতিতে
দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়ে যাওয়ার জন্য পরবর্তী ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে মনোনীত রাজ্যসভার সদস্য পদ ছেড়ে দেন মিঠুন চক্রবর্তী, তাও মেয়াদ শেষের বেশ খানিকটা আগেই। তারপরে বেশ কিছু সময় রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান বাংলার মহাগুরু। কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না যে তিনি আদৌ রাজনীতিতে ফিরবেন কিনা, বা পুরনো দলে যোগ দেবেন কিনা। কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে পুনরায় এত আলোচনা শুরু হয়নি। কিন্তু হঠাৎ একদিন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে দেখা করার ছবি সামনে আসতেই মিঠুন চক্রবর্তীর বিজেপি যোগের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে যায় অদ্ভুত ভাবেই। তারপরের কয়েকটা দিন যা ঘটেছে তা সকলেরই জানা।