উত্তরাখণ্ডে নিখোঁজদের মৃত ঘোষণা, কান্নার রোল বাংলার ৩ নিখোঁজ পরিবারে

উত্তরাখণ্ডে নিখোঁজদের মৃত ঘোষণা, কান্নার রোল বাংলার ৩ নিখোঁজ পরিবারে

 

উত্তরাখণ্ড: তুষারধসে আটকে পড়ে নিখোঁজ ১৩৬ জনকে সরকারিভাবে মৃত বলে ঘোষণা করে দিল উত্তরাখণ্ড সরকার। ওই ১৩৬ জনের মধ্যে এই রাজ্যের মহিষাদলের লক্ষ্যা গ্রামের দুই ভাই লালু ও বুলা জানা এবং চক দ্বারিবেরিয়া গ্রামের সুদীপ গুড়িয়াও ছিল। উত্তরাখণ্ডের ঘোষণার পরই কান্নায় ভেঙে পড়েছে দুই পরিবার। কোনোরকমে আশা নিয়ে এতদিন বাড়ির ছেলের বাড়িতে ফেরার অপেক্ষা করছিল তাদের আপনজনরা। কিন্তু মঙ্গলবার উত্তরাখন্ড সরকারের ঘোষণায় সব ভেস্তে গেল।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি আট বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে ভয়াবহ তুষারধ্বস নামে উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার রেনি গ্রামের কাছে। আচমকা ধ্বসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই হারিয়ে যান ১৫০-এরও বেশি মানুষ। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ লালু ও বুলা জানা এবং সুদীপ গুড়িয়ার বাড়ির লোক উত্তরাখণ্ডে পৌঁছন। সেখানে পুলিশের ক্যাম্পে নিখোঁজ যুবকের ছবি, নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য দেন তারা। সংগ্রহ করা হয় পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ।

১৬ ফেব্রুয়ারি লালু ও বুলা জানার ছোট ভাই রামকৃষ্ণ জানা এবং সুদীপ গুরিয়াররিয়ার দাদা প্রদীপ গুড়িয়া উত্তরাখান্ড থেকে রাজ্যে ফিরে আসেন। খুব ক্ষীণ আশা নিয়ে এইকদিন দুই পরিবার কোনোরকমে তাদের ছেলেদের বাড়ি ফেরার প্রার্থনা করছিল ঈশ্বরের কাছে। যদিও নিখোঁজদের মা-বাবার অবস্থা এই কদিন বিশেষ একটা ভালো নেই। লালু ও বুলার বাবা ধ্রুবগোপাল জানা ও মা দেবীরানী জানা দুই ছেলের নিখোঁজের খবরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মঙ্গলবার তাদের মৃত্যুর খবর শুনে অবস্থা স্বাভাবিকভাবেই আরও খারাপ হয়ে উঠেছে। একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে গিয়েছেন উচ্চ রক্তচাপের রোগী দেবীরানী জানা।

একই অবস্থা সুদীপ গুড়িয়ার বাড়িতেও। তার দাদা প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, “প্রায় এক বছর ধরে ভাই উত্তরাখণ্ডে রয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসেছিল। লকডাউন শুরুর আগেই আবার চলে গিয়েছে। এই ফেব্রুয়ারিতে আসার কথা ছিল। কিন্তু সেই শেষ দেখাটা আর হল না। উত্তরাখণ্ড সরকার নিখোঁজদের মৃত ঘোষণা করে দেওয়ায় ভাইয়ের ফিরে আসার আর কোন আশা রইল না।” মহিষাদলের দুই পরিবারেই আক্ষেপ, প্রাকৃতিক বিপর্যয় অনেকেরই মৃত্যু হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে শেষ দেখাটাও হল না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *