কলকাতা: করোনা আবহে পরীক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা শোচনীয়। অনলাইনে পড়াশোনা চললেও পরীক্ষা নিয়ে এখনও কোনও স্থিতাবস্থায় আসা সম্ভব হয়নি। তাই পরের বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কবে হবে তা নিয়ে চিন্তায় পরীক্ষার্থীরা।
এই পরিস্থিতিতে ২০২১ সালের পরীক্ষার সিলেবাস ছাঁটাই করছে সরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়েছে যে ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা মাধ্যমিক। কিন্তু শিক্ষা দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে এই বিজ্ঞপ্তি ভুল। পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ এর তদন্ত শুরু করেছে।
করোনা পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের ঠিকঠাক পড়াশোনা ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করা সম্ভব হয়নি। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার্থে আগামী বছর উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ সিলেবাস কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে পরের বছরই বিধানসভা নির্বাচন। শোনা যাচ্ছে নির্বাচন শেষ হলেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে জুন মাসে পরীক্ষা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এনিয়ে শিক্ষা দফতর বা কোনও সরকারি আধিকারিক কোনও মন্তব্য করেননি। এদিকে অভিভাবকরা চাইছেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক জুন মাস বা যখনই হোক, তা যেন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় রাজ্য সরকার।
এছাড়া শিক্ষা দফতরের তরফে ইতিমধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মাধ্যমিকে ভৌতবিজ্ঞান, জৈব রসায়ন বিদ্যা এবং অজৈব রসায়নের কিছু কিছু অংশ বাতিল করা হয়েছে। জীবনবিজ্ঞানে অভিব্যক্তি, অভিযোজন ও পরিবেশ ভিত্তিক পাঠক্রম বাদ। ইতিহাসের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম অধ্যায়ও বাদ গিয়েছে। ভূগোল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে প্রাকৃতিক ভূগোলের বেশ কিছু অংশ। অংকের সিলেবাসে ত্রিকোণমিতিক পরীক্ষা থাকবে না বলে জানানো হয়েছে। ইংরেজিতে বেশ কিছু অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিকের মত উচ্চ মাধ্যমিকেও একই ঘটনা ঘটেছে। বাংলা, ইংরেজি, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, ফ্রেঞ্চ ও পার্সি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু অংশ। বাংলা, ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে বাদ পড়েছে অনেক অংশ। উচ্চ মাধ্যমিক ইংরেজি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে চতুর্থ চ্যাপ্টার। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বৈদেশিক নীতি ও রাষ্ট্রসংঘ বাদ পড়েছে। রসায়ন ও পদার্থবিদ্যা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কিছু অংশ।
তবে এ ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক কিছু শিখতে পারবে না বলে মনে করছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতি হবে বেশি। সিলেবাদ অধিকাংশ বাদ যাওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা পিছিয়ে পড়তে পারে ছাত্রছাত্রীরা।