কলকাতা: পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের বাকি আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ। যেকোনও দিন ঘোষণা হয়ে যেতে পারে ভোটের দিনক্ষণ। রাজ্যে ইতিমধ্যেই হাজির হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাংলার ময়দানে বেজে গিয়েছে ভোটের দামামা। আসন্ন বিধানসভা ভোটে বাংলাকে কার্যত পাখির চোখ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। যে করেই হোক বাংলার দখল পেতেই হবে। কিন্তু বঙ্গ বিজেপিতে ভরসা নেই কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বর। তাই ভিনরাজ্য থেকে দাপুটে নেতাদের নিয়ে এসে বাংলায় ভোটের রণকৌশল ঠিক করছে গেরুয়া শিবির।
নীলবাড়ি দখলের উদ্দেশ্যে প্রায় মাস তিনেক আগে থেকেই কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে কেন্দ্রীয় দল। বাংলাকে বিভিন্ন জোনে ভাগ করে দিয়ে প্রোভারি থেকে ইনচার্জ-সহ বিভিন্ন পদ সৃষ্টি করে সেখানে ভিন রাজ্য থেকে বিজেপি নেতা, মন্ত্রী ও সাংসদদের নিয়ে এসে বসানো হচ্ছে। প্রতিটি বিধানসভা আসনে ভিনরাজ্য থেকে একজন করে ইনচার্জ হিসেবে এসে ভোট পরিচালনা করবেন। গত মাস দুয়েক থেকেই দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে নেতা-মন্ত্রীদের নিয়ে এসে এই ইনচার্জ নিয়োগ চলছে। রাঢ়বঙ্গের ইনচার্জ যেমন করা হয়েছে দক্ষিণ ভারতের বিজেপি নেতা রবীন্দ্র রাজুকে।
এছাড়াও, প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের হালহকিকতের খবর রাখা, বুথ ও মন্ডল সভাপতিদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য একজন করে ভিনজেলার সংগঠককে বিস্তারক করে আগেই নিয়ে আসা হয়েছে। এবার বিস্তারকের মাথার উপরে থাকবে বিস্তারক ইনচার্জ। প্রত্যেকটি লোকসভা কেন্দ্রে একজন করে ভিনরাজ্যের বিজেপি নেতাকে বিস্তারক ইনচার্জ হিসেবে নিযুক্ত করা হচ্ছে। কার্যত ভিনরাজ্যের নেতাদের নির্দেশেই কাজ করতে হবে বিস্তারকদের। আবার রাজ্যকে কয়েকটি জোনে ভাগ করে প্রত্যেকটি প্রোভারি পদে একজন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা নেতাকে বসানো হচ্ছে। কিছুদিন আগেই যেমন রাঢ়বঙ্গের প্রোভারি পদের দায়িত্বে থাকা মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র এই রাজ্যেও লাভ জিহাদ চালু করার দাবি করেন।
এর আগে নির্বাচনের রণকৌশল ঠিক করার জন্য বাংলায় কোনও রাজনৈতিক দলের গো-বলয়ের নেতাদের প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের সেই ছবিই তুলে ধরতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। ভোট যত এগিয়ে আসছে বাংলায় তত বাড়ছে ভিন রাজ্যের নেতা মন্ত্রী-সাংসদদের ভিড়। এ নিয়ে রাঢ়বঙ্গের বিজেপি কো-অবজার্ভার নির্মল কর্মকার জানিয়েছেন, “কেউ যদি নিঃশর্তে সাহায্য করতে চায় আমরা কেন তা নেব না? বাংলায় জয় সুনিশ্চিত করতে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ কার্যকর্তারা প্রস্তুত।” যদিও এই ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে রাজ্য বিজেপির অন্দরমহলে। বঙ্গ বিজেপিতে দিলীপ ঘোষ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়ন্তন বসুর মত মুখ থাকা সত্ত্বেও কেন কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্ব তাদের উপর ভরসা পাচ্ছেন না? বিজেপির এই রণকৌশল খুব একটা ভালো চোখে দেখছে না বাংলার মানুষ।