নন্দীগ্রাম: সালটা ২০১৯। রাজ্যে শিক্ষা শিল্প চাকরি প্রভৃতি সবক্ষেত্রে সাম্যের দাবিতে পথে নেমেছিলেন বামপন্থী ছাত্র যুব সংগঠনের কর্মীরা। ‘ভাতের লড়াইয়ের হিসেব’ বুঝে নিতে কলকাতার রাজপথ বেয়ে সেদিনের সেই শান্তিপূর্ণ মিছিল চলছিল নবান্নের অভিমুখে। কিন্তু বেশিদূর এগোতে হয়নি। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে যথারীতি নেমে এসেছিল পুলিশি দমন। লাঠিচার্জ, কাদানে গ্যাস আর জলকামানের ভিড়ে সেদিন দিশাহারা হয়েছিল লাল ঝান্ডা হাতে তরুণ প্রজন্ম। রাস্তায় পড়ে মার খেয়েছিলেন ডিওয়াইএফআই (DYFI)-এর রাজ্য সভাপতি মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।
গতকাল বামেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকে বঙ্গ রাজনীতিতে জোর চর্চায় রয়েছে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নাম। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে হাইভোল্টেজ কেন্দ্র থেকে এই তরুণীকেই প্রার্থী করেছে সিপিআইএম। ফলে হেভিওয়েট নন্দীগ্রামে আগামী নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর বিপরীতে লড়তে দেখা যাবে ডেমোক্রেটিক ইয়ুথ ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে। এটাই হয়তো তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় এবং উল্লেখযোগ্য সময় হতে চলেছে। রাজনৈতিক চর্চার কেন্দ্রে যখন লাল ঝান্ডা হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মীনাক্ষী, তখন রাজনীতির আঙিনায় তাঁর সংগ্রামের ছবিটাও ঘুরেফিরে আসছেন বারবার।
২০১৯ সালের নবান্ন অভিযানে পুলিশি দমনের মুখে সহকর্মীদের আগে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এই মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। যখন মিছিলে অংশগ্রহণকারী নিরস্ত্র মুখ গুলোর দিকে ধেয়ে আসছিল পুলিশের লাঠি, সেসময় সামনে গিয়ে হাত জোড় করে মীনাক্ষী বলেছিলেন, “আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে এসেছি, দয়া করে আপনারা লাঠিচার্জ করবেন না।” কাতর অনুরোধ অবশ্য কাজে লাগেনি, পুলিশের লাঠির ঘায়ে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন ডিওয়াইএফআই সভানেত্রী। অভিযোগ, পড়ে যাওয়ার পরেও ধেয়ে এসেছিল পুলিশের লাঠি।
এবারের নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সেদিনের ভূলুণ্ঠিত সেই তারুণ্যের স্পর্ধা দেখবে গোটা রাজ্য, আপাতত সেই স্বপ্নেই বিভোর বাম শিবির।