নেটপাড়ার সেই ‘চা-কাকু’র দায়িত্ব দিলেন সাংসদ মিমি

নেটপাড়ার সেই ‘চা-কাকু’র দায়িত্ব দিলেন সাংসদ মিমি

কলকাতা: 'চা খাব না আমরা? আমরা খাব না চা?'- খুবই স্বাভাবিক ,সাধারণ এই মনের কথা দুটি রাতারাতি স্যোশাল মিডিয়ায় এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠব তা হয়তো ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারেননি দক্ষিণ কলকাতার শ্রী কলোনির চা-কাকু ওরফে মৃদুল দেব। তবে তাঁর এই জনপ্রিয়তা সুনামের নয় বরং বদনামের ছিল। আর এখন সেই সেই বদনাম আশীর্বাদ হয়ে ফিরে এসেছে মৃদুল বাবুর জীবনে। তাঁকে নিয়ে ট্রোল, মিম কোনোটাই চোখ এড়ায়নি সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর। সঙ্গে সেই ভিডিওগুলিও চোখে পড়েছে যেখানে এই মানুষের দৈনন্দিন লড়াই তুলে ধরা হয়েছে।

বৃদ্ধা মা, প্রতিবন্ধী এক দিদি,স্ত্রী ও এক ছেলে নিয়ে পেশায় দিনমজুর মৃদুল বাবুর অনটনের সংসার। একচিলতে ঘরে  পাঁচজনের গাদাগাদি করে থাকেন যিনি তার কাছে  স্যোশাল ডিসট্যান্সিং-এর বিষয়ে জানার আগ্রহ না থাকাটাই স্বাভাবিক। আর সবচেয়ে বড় কথা, তিনি চা খেতে বড্ড ভালোবাসেন। দুবেলা দুমুঠো ভাত ছাড়া সারাদিনে সাত-আট কাপ চা খেয়েই তাই বাকি সময়ের খিদে মিটিয়ে নেন। সব দেখে শুনে যাদবপুরের সাংসদ মিমি শুধু চায়ের প্যাকেটই নয়, লকডাউনের মধ্যে বাইরে বেরিয়ে আবারও যাতে ট্রোলের শিকার না হতে হয় তাই সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয়  জিনিস বাড়িতেই পাঠিয়ে দিয়েছেন। ভিডিয়ো কলে তাঁর সঙ্গে কথাও বলেছেন।  শুধু তাই নয় আগামী দিনে যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন।

হয়তো সেদিনটা আর পাঁচটা দিনের থেকে আলাদা ছিল। দেশজুড়ে জারি ছিল জনতা কারফিউ। কাজ থেকে ফিরে ক্লান্তি কাটাতে তাই অভ্যাসবশতই স্থানীয় একটি চায়ের দোকানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মৃদুল বাবু। দোকান খোলা, জনা কয়েক লোকের জমায়েতও ছিল। হঠাৎই কারফিউতে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও করতে থাকা এক তরুণীর চোখে পড়ে যান ওই মৃদুলবাবু। সচেতনতার খাতিরেই তরুণীর জিজ্ঞাস্য ছিল কেন এই কারফিউ অমান্য করে চা খেতে বেড়িয়েছেন? তখন মৃদুল বাবুরও খুব নিরীহ পাল্টা একটি প্রশ্ন ছিল, আমরা খাব না চা?

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে এই চা খেতে আসা  নেটিজেনদের কাছে কিন্তু এটি একটি গুরুতর অপরাধ বলেই মনে হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে যেখানে এই নেটিজেনদেরই একাংশ ফেক নিউজ ছড়িয়ে স্যেশাল মিডিয়াকে রীতিমতো ভয়াবহ রূপ দিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত তাদের কাছে সচেতনতা প্রচারের এই অভিনব পন্থা ঠিক কোন দিকটি তুলে ধরতে চাইছেন তা কিন্তু বিবেচনার অপেক্ষা রাখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *